ফের আচমকা বোমা ফাটল দুর্গাপুরে। প্লাস্টিকের প্যাকেটে থাকা বোমা ফেটে বালিকার মৃত্যুর পরে এ বার গুরুতর জখম হল এক কিশোর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার পানশিউলি গ্রামে পুকুর পাড়ে বোমা ফেটে জখম ওই কিশোর বর্ধমান মেডিক্যাল কলজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আগের ঘটনার মতোই এ ক্ষেত্রেও কে বা কারা ওই বোমা রেখে গিয়েছিল, তার এখনও কোনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে একটি পুকুরপাড়ে গিয়েছিল বছর বারোর আবীর ঘোষ। পা পিছলে পড়ে যায় সে। তখনই বিকট আওয়াজ করে একটি বোমা ফাটে। গুরুতর জখম হয় স্থানীয় স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ওই পড়ুয়া। রাতে তাঁকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় শুক্রবার সকালে তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। |
গত মঙ্গলবার দুর্গাপুরের রাঁচি কলোনিতে খেলার সময়ে আবজর্নার প্লাস্টিকের মধ্যে থাকা বোমা ফেটে জখম হয় কুমকুম ডোম নামে এক বালিকা। প্রথমে তাকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে, পরে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। বুধবার সেখানেই মৃত্যু হয় তার। ঘটনার পরে এলাকার বাসিন্দারা পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছিলেন। পুলিশ পরে এলাকায় গিয়ে তদন্ত ও তল্লাশি চালায়। গোয়েন্দা বিভাগের কর্মীরাও এলাকায় গিয়ে মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু কে বা কারা ওই জায়গায় বোমা রেখেছিল, সে ব্যপারে পুলিশ কিছু জানাতে পারেনি। ঘটনার দ্রুত কিনারার আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। তারই মধ্যে মহকুমায় ফের একই রকম ঘটনায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে গ্রামবাসীরা তাদের কাছে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
শুক্রবার সকালে বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের কর্মীরা পানশিউলি গ্রামে যান। তাঁরা এলাকায় তল্লাশি চালান। কুকুর নিয়ে গিয়ে বহুক্ষণ তল্লাশি চালায় পুলিশও। কিন্তু তেমন কোনও সূত্র মেলেনি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতারও করতে পারেনি পুলিশ। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ জানান, কী ভাবে ওই জায়গায় বোমাটি এল পুলিশ তা তদন্ত করে দেখছে। |
রাঁচি কলোনির ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা এলাকায় সন্দেহজনক লোকজনের আনাগোনার অভিযোগ তুলেছিলেন। আপাত শান্ত হলেও দুর্গাপুরে নিয়মিত দুষ্কৃতী আনাগোনা রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল। প্রশ্ন উঠেছিল পুলিশ কমিশনারেটের ভূমিকা নিয়েও। পুলিশের তরফে অবশ্য আশ্বাস দেওয়া হয়, সর্বত্র নজর রাখা হচ্ছে। অপরাধীদের দ্রুত ধরে ফেলা হবে। ওই ঘটনার তিন দিনের মধ্যে ফরিদপুর থানার পানশিউলিতে একই ধরনের ঘটনায় আবার প্রশ্ন উঠল নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে। আগের ঘটনার মতোই পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ ফের আশ্বাস দিয়েছেন, জড়িতদের দ্রুত ধরা হবে। আশ্বাসে আতঙ্ক অবশ্য কাটছে না।
|