|
|
|
|
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার নালিশ |
সিপিএমের দফতর ভেঙে দিল প্রশাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কালিয়াগঞ্জ |
সরকারি জমিতে বেআইনি ভাবে তৈরি করা সিপিএমের দলীয় কার্যালয় ভেঙে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল কালিয়াগঞ্জে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে কালিয়াগঞ্জ শহরের সুকান্ত মোড় এলাকায়। এদিন ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট নিতেশ ঢালির উপস্থিতিতে পূর্ত দফতর সিপিএমের কালিয়াগঞ্জ জোনাল কমিটির ওই কার্যালয় ভেঙে দেয়। কংগ্রেসের নির্দেশে প্রশাসন তাঁদের কার্যালয় ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অভিযোগ তুলে সিপিএমের কয়েকশো নেতা কর্মী প্রশাসনিক কর্তাদের বাধা দেন বলে অভিযোগ। এর পরে নিতেশবাবুর নির্দেশে পুলিশ সিপিএমের কালিয়াগঞ্জ জোনাল কমিটির সম্পাদক ভরতেন্দু চৌধুরী, দলের প্রাক্তন বিধায়ক ননীগোপাল রায়, জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য দিলীপ দাস, দুলাল সরকার-সহ ৩১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। সিপিএমের অভিযুক্ত নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ সিআরপিসি’র ১৫১ ধারায় মামলা শুরু করেছে। ধৃতদের এদিন বিকালে থানা থেকেই ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জমিতে ওই কার্যালয়টি চলছিল। পূর্ত দফতর একাধিকবার সিপিএম নেতাদের কার্যালয়টি সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করে। তাতে কোনও কাজ হয়নি। |
|
বৃহস্পতিবার তরুণ দেবনাথের তোলা ছবি। |
এর ফলে, কালিয়াগঞ্জ শহরে নিকাশি নালা তৈরির কাজ আটকে রয়েছে। সেই কারণেই এদিন পূর্ত দফতর, পুলিশ ও প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে বেআইনি ভাবে তৈরি কার্যালয়টি ভেঙে দেয়। শহরে সরকারি জমিতে আর কোনও বেআইনি নির্মাণ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তবে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ের পুরোটাই সরকারি জমিতে থাকলেও তা সম্পূর্ণ ভাঙা হবে না। অর্ধেক অংশ ভেঙে নালার কাজ শেষ করা হবে। বাকি অংশে নতুন করে দলীয় কার্যালয় গড়া হলে প্রশাসন আপত্তি জানাবে না।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের ধারে পূর্ত দফতরের জমিতে ১৯৬৯ সালে ১২ ফুট উচু সিপিএমের ওই দলীয় কার্যালয় গড়ে ওঠে। ২০০৪ সালে প্রায় ৩৪ লক্ষ টাকা খরচে পূর্ত দফতর কালিয়াগঞ্জ শহরের স্টেশন বাজার এলাকা থেকে শ্রীমতি নদী পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার একটি নিকাশি নালা তৈরির কাজে নামে। ওই নিকাশি নালার পথে সিপিএমের ওই দলীয় কার্যালয়টি পড়ে যাওয়ায় কাজ থমকে যায়। সেই থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় নির্মীয়মান ওই নালা পড়ে রয়েছে। গত ২ ফেব্রুয়ারি পূর্ত দফতর শহরে মাইকিং করে ১৫ দিনের মধ্যে সরকারি জমি থেকে কার্যালয়টি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়। এদিন বেলা ১১টা নাগাদ নিতেশবাবু ও রায়গঞ্জের ডিএসপি অম্লান ঘোষের নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী সিপিএমের ওই কার্যালয় ঘিরে ফেলে। ভরতেন্দুবাবু বলেন, “তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে রাজ্যে ক্ষমতা দখল করার পর কংগ্রেস প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠেছে। প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে আমাদের কার্যালয় ভেঙে দেওয়া হল। প্রশাসনের কাছে আমরা কার্যালয়ের নিচ দিয়ে হিউম পাইপ বসিয়ে নালার কাজ শেষ করার আর্জি জানিয়েছিলাম। কোনও লাভ হয়নি। শহরে সরকারি জমিতে একাধিক দোকান, কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় ও কংগ্রেস পরিচালিত একটি মাল্টিপারপাস ভবন। সেগুলি ভাঙা হচ্ছে না। কংগ্রেস ও প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণের প্রতিবাদে জেলা জুড়ে বিক্ষোভ আন্দোলন হবে।” কালিয়াগঞ্জ টাউন কংগ্রেস সভাপতি তথা পুর চেয়ারম্যান অরুণ দে সরকার বলেন, “পুর কর্তৃপক্ষ সিপিএম কার্যালয়ের নিচ দিয়ে হিউম পাইপ বসিয়ে নিকাশি নালার কাজ শেষ করার প্রস্তাব দলের নেতাদের দিয়েছিল। সেই প্রস্তাবে সিপিএম নেতারা রাজি হলে কার্যালয়টি ভাঙা পড়ত না।” |
|
|
|
|
|