জমির ব্যবস্থা হয়ে যাওয়ার পরেও উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে বিবাদে আটকে গিয়েছে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির কাজ। এই অহস্থায় উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য বরাদ্দ টাকা ফেরত চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার মহকুমার মথুরাপুর-১ ব্লকের লালপুর পঞ্চায়েতে। |
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মথুরাপুর-১ ব্লকের লালপুর পঞ্চায়েতের মানিকতলা, চিত্রগঞ্জ ও রানাঘাটা এই তিন গ্রামের মধ্যে মানিকতলা গ্রামে একটি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের জন্য কয়েক বছর আগে অর্থ অনুমোদন হয়।যে জমিতে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয় সেই জমিটি তিনটি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায়। সেই সময় সভা ডেকেই ওই জায়গায় উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু পরে দেখা যায় যেখানে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে সেখানে যাতায়াতের সমস্যা রয়েছে। এ ব্যাপারে ফের পঞ্চায়েত মথুরাপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতি এবং লালপুর পঞ্চায়েতের সমস্ত সদস্যদের নিয়ে সভা ডাকা হয়। সেখানে ঠিক হয় যেখানে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে সেই জায়গার পরিবর্তে পার্শ্ববর্তী চিত্রগঞ্জ গ্রামে তা নির্মাণ করা হবে। এতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মানিকতলা গ্রামের মানুষ এবং পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যেরা। পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য ও বিরোধী দলনেতা আলমগীর হোসেন ঘরামি বলেন, “এ ভাবে টালবাহানায় টাকা ফেরত চলে যাওয়ার আশঙ্কায় আমি ব্যক্তিগত ভাবে এর বিরোধিতা না করলেও গ্রামবাসীরা এটা মেনে নিতে নারাজ।” গ্রামবাসীদের দাবি, এই গ্রামে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হলে তিনটি গ্রামের মানুষ তাড়াতাড়ি সেখানে পৌঁছতে পারতেন। কিন্তু চিত্রগঞ্জ গ্রামে চা তৈরি হলে তাঁদের প্রায় আধঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যাবে সেখানে হেঁটে পৌঁছতে। |
লালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আব্দুর রাজ্জাক হালদার বলেন, “আমরা এলাকার উন্নয়নের কাজ করতে চাই। উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের জন্য সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা অনুমোদন হয়ে পড়ে আছে। তা আমরা ফিরিয়ে দিতে পারি না। তাই চিত্রগঞ্জ গ্রামে ওই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এতে মানিকতলা গ্রামের মানুষ খেপে গিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। এই অবস্থায় আটকে আছে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের কাজ।” মথুরাপুর-১ এপ বিএমওএইচ তপন পাল বলেন, “ওই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে রোগী কল্যাণ সমিতির সঙ্গে সভা করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ানোয় কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” বিডিও দিপ্তার্ক বসু বলেন, “এখনও পর্যন্ত আদালতের কাছ তেকে আমাদের কাছে কোনওরকম নির্দেশ এসে পৌঁছয়নি। তবে চিত্রগঞ্জ গ্রামেই যাতে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরি হয় তার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ আগে যেখানে তৈরি হওয়ার কথা হয়েছিল সেখানে যাতায়াতের অসুবিধা রয়েছে।”
|