ধর্মঘট ‘সফল’ করতে ধর্মঘটীরা কোনও জোর খাটাবেন না। ধর্মঘট ‘ব্যর্থ’ করার জন্য রাজ্য সরকারও বলপ্রয়োগ বন্ধ রাখুক। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ ধর্মঘট নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে যে ‘সংঘাতে’র বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে এই মীমাংসা সূত্র দিলেন সিপিআইয়ের প্রবীণ নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত।
আগামী মঙ্গলবারের ধর্মঘট ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে যা চলছে, তাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক ও ব্যতিক্রমী’ বলে অভিহিত করেছেন গুরুদাসবাবু। ধর্মঘটকারী শ্রমিক সংগঠনগুলির তরফে তিনি বৃহস্পতিবার কলকাতায় বলেছেন, “আমরা একটা আচরণবিধি মেনে চলতে পারি। রাজ্য সরকারকে বলছি, আপনারা জোর করে ধর্মঘট ভাঙতে যাবেন না। আমরাও ধর্মঘটের জন্য জোর করব না। ধর্মঘটের পক্ষে-বিপক্ষে প্রচার চলুক। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মানুষই ঠিক করে নেবেন, তাঁরা কী করবেন।” সারা দেশে ধর্মঘট ডাকা হলেও একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই তা নিয়ে ‘রাজনৈতিক উত্তেজনা’ তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন এআইটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক গুরুদাসবাবু। কেন্দ্রীয় সরকারের যে সব আর্থিক নীতির বিরোধিতা ইউপিএ-র শরিক নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়শই করছেন, সেই সংক্রান্ত দাবিতেই ডাকা ধর্মঘটকে ‘জোর করে’ দমন করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে অনুরোধ করেছেন সিপিআই সাংসদ। জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে এই ধর্মঘটের কোনও বিরোধ নেই।
শ্রমিকদের যে দাবিতেই হোক, ধর্মঘট যে শেষ পর্যন্ত উন্নয়নের ব্যাঘাত ঘটায় এই কথা কেন তাঁরা বুঝছেন না? গুরুদাসবাবুর দাবি, “এক দিনের ধর্মঘটে উন্নয়নের ক্ষতি হবে না। বরং, ধর্মঘট নিয়ে যদি উত্তেজনা এবং সংঘাত বজায় থাকে, তা হলেই উন্নয়নের ক্ষতি হবে।” ধর্মঘটের পক্ষে মিছিল করতে গিয়ে বর্ধমানে বুধবার সিপিএমের দুই নেতা প্রদীপ তা ও কমল গায়েনের খুনের ঘটনা উল্লেখ করে তাঁর বক্তব্য, এমন পরিবেশ থাকলে এই রাজ্যে কেউ বিনিয়োগে উৎসাহী হবেন না। প্রসঙ্গত, ধর্মঘটকারী ১১টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন বর্ধমানে ওই দুই নেতার মৃত্যুর ঘটনায় একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে পশ্চিমবঙ্গের ‘মেহনতি শ্রেণিকে নির্ভয়ে’ ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এরই মধ্যে, ধর্মঘটকারীদের তালিকায় শিব সেনা এবং মুসলিম লিগের শ্রমিক সংগঠনও যোগ দিয়েছে। সমর্থনের কথা জানিয়েছে মোট ৫ হাজার ৪২৪টি ইউনিয়ন। |