বর্ধমানে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক প্রদীপ তা খুনের ঘটনার তদন্ত নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে করানোর আর্জি জানিয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হল। আবেদনকারীদের দাবি, নেতাই-হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রেযা করা হয়েছে, এখানেও সে ভাবে হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে সিবিআইয়ের মতো নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানো হোক। কারণ, এ বিষয়ে সরকার এবং পুলিশ প্রশাসনের মধ্য দিয়ে ‘পরস্পরবিরোধী’ বিবৃতি উঠে আসছে। এ দিন প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর এজলাস বসার সঙ্গে সঙ্গে আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায়-সহ কয়েক জন আইনজীবী প্রধান বিচারপতির মনোযোগ আকর্ষণ করে বলেন, তাঁরা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আদালতকে জানাতে চান এবং আদালতের নির্দেশ চান। আদালত সুব্রতবাবুর বক্তব্য শুনে জানিয়ে দেয়, মৌখিক ভাবে কোনও আবেদন জানালে আদালত বিচার করতে পারে না। লিখিত আবেদন জানানোর পরেই মামলাটির শুনানি হবে। আবেদনকারীরা লিখিত ভাবে আবেদন জমা দিলে আজ, শুক্রবার মামলাটির শুনানি হতে পারে।
কেন হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে কোনও নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করাতে চাইছেন? ব্যাখ্যা দিয়ে সুব্রতবাবু ডিভিশন বেঞ্চকে বলেন, বুধবার বর্ধমানের খুনের ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যের অপর তিন মন্ত্রী এবং এডিজি সুরজিৎ পুরকায়স্থ যে মন্তব্য করেছেন, তা পরস্পরবিরোধী। তিনি বলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক, ফিরহাদ হাকিম ও পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, গণরোষের ফলেই ওই ঘটনা ঘটেছে। দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই ঘটনা ঘটেছে সিপিএম দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জন্য। এডিজি বলেন, দু’পক্ষের বচসাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে এই ঘটনা ঘটেছে।
সুব্রতবাবুর প্রশ্ন: সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশের বক্তব্যের মিল নেই, মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যদের মন্তব্যের মিল নেই। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের কোনও সংস্থার হাতে তদন্তের দায়িত্ব থাকলে সুবিচার হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে তাঁর মত। নন্দীগ্রাম ও নেতাইয়ে গুলিচালনার ঘটনার কথা উল্লেখ করে আবেদনকারী বলেন, ওই সব ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারের হাত থেকে তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিল। এক্ষেত্রেও হাইকোর্ট সেটাই করুক। |