রাজ্যের আর্থিক হাল ফেরাতে বাড়তি অর্থ সাহায্য এবং বাজেটে উন্নয়ন খাতে অর্থ বৃদ্ধির দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষ হতেই মুখ্যমন্ত্রী চলে যান কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের দফতরে। প্রায় আধ ঘণ্টা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। পরে মমতা ওই বৈঠককে সৌজন্য-সাক্ষাৎকার বললেও তৃণমূল সূত্রের খবর, আসন্ন বাজেটে রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প খাতে যাতে আর্থিক সাহায্য কয়েক গুণ বৃদ্ধি করা হয় সেই দাবি জানানো হয়েছে। এর আগে রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে আট হাজার কোটি টাকারও বেশি দেওয়ার কথা জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে আগামী বাজেটে রাজ্যের শিক্ষা-স্বাস্থ্য-সড়ক-সংখ্যালঘু উন্নয়ন-নগরোন্নয়নের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে একগুচ্ছ প্রকল্পে বরাদ্দ আরও কয়েক হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি করার দাবি জানানো হয়েছে।
রাজ্যের ঋণের বোঝা মোকাবিলায় ফের একবার অথর্র্ মন্ত্রকের সাহায্য চাওয়া হয়। এর জন্য রাজ্যকে বিশেষ আর্থিক সাহায্য দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে বৈঠকে। যদিও অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, ওই বিষয়ে কেন্দ্রের যে আর্থিক নীতি রয়েছে, তার কারণে ইচ্ছা থাকলেও কোনও রাজ্যকে যথেচ্ছ ভাবে অর্থ সাহায্য করতে পারে না মন্ত্রক। রয়েছে রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা-ও। তাই সরাসরি রাজ্যকে অর্থ না দিয়ে তার বদলে রাজ্যকে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা খাতে বেশি অর্থ দেওয়া, বা বিশ্ব ব্যাঙ্ক, এডিবি-র মতো সংস্থার কাছ থেকে ঋণ পেতে সাহায্য করে থাকে কেন্দ্র। অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, সেই ঋণ পেতে সংস্থাগুলির শর্ত অনুযায়ী কর সংস্কার করতে হবে রাজ্যকে। সে বিষয়ে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে মমতাকে জানানো হয়।
রাজ্যের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের জন্য ‘ইন্টারেস্ট অ্যান্ড রিপেমেন্ট কম্পেনসেটরি গ্রান্ট’ ঘোষণা করুক কেন্দ্র। রাজ্য সরকার সূত্রের খবর, বর্তমানে রাজ্যের মাথায় দু’লক্ষ কোটি টাকা ঋণের বোঝা রয়েছে। সেই ঋণের সুদ দিতে রাজ্যের কোষাগারের বড় অংশ খরচ হয়ে যাচ্ছে। রাজ্যের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু ঋণ খাতে রাজ্যকে বছরে ১৫ হাজার কোটি টাকা সুদ মেটাতে হয়। রাজ্যের অনুরোধ, আগামী ৩ বছর কেন্দ্র ওই সুদ না নিলে কিছুটা হাঁফ ছাড়ার সুযোগ পাবে তারা। তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে, আজ ওই বিষয়টি নিয়েও প্রণববাবুর কাছে দরবার করেন মমতা। |