যোগাযোগ পরিষেবাই মুছে যেতে বসেছে নদিয়ার কালীগঞ্জের বল্লভপাড়া ঘাট ও বর্ধমানের কাটোয়া ঘাটের মধ্যে। কালীগঞ্জের দেবগ্রামে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে বাসে ১৭ কিমি বল্লভপাড়া ঘাট। বালির বাঁধ আরও কিলোমিটারখানেক। বলাইবাহুল্য রাস্তাটি যান চলাচলের অনুপযুক্ত। গাড়ি চলাচল ধুলোয় টেঁকা দায়।
সমস্যা বাড়ে সন্ধ্যের পরে। বল্লভপাড়া থেকে বালির বাঁধ পর্যন্ত রাস্তায় কোনও আলো, শৌচালয় এমনকী যাত্রী প্রতীক্ষালয়ও নেই। ফলে বৃদ্ধ, প্রসূতী, রোগী অথবা শিশুদের পক্ষে যাতায়াত মুশকিলের। এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েও কোনও ফল পাননি। |
ঘাট রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কাটোয়া পুরসভার দাবি ঘাট উন্নয়নে তারা সবই করেছেন। অন্যদিকে কালীগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির দাবি, কাটোয়া পুরসভা হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে, তাই সংস্কারের কাজ তাদেরই করতে হবে। কালীগঞ্জের মুরুটিয়ার বাসিন্দা সদানন্দ কর্মকার বলেন, “দিনের পর দিন এ ভাবেই গাড়ি, লরি পারাপারও হচ্ছে। ছোটখাট দুর্ঘটনা লেগেই আছে। নৌকা ভাড়াও নির্দিষ্ট নয়। কেউ বাজার করে ফিরলে ৫ টাকা, গুড়ের টিন ৫০ টাকা, মৃতদেহ নিয়ে যেতে হলে ৫০০ টাকা, এমনকী বরের টোপর নিয়ে যেতেও আলাদা আলাদা ভাড়া চাওয়া হয়। একেবারেই মগের মুলুক!” তেহট্ট, কৃষ্ণনগর, বেতাই, পলাশি মনুমেন্ট থেকে প্রতিদিন ভোর ৫টা ২০ থেকে রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত যাতায়াত করে দেবগ্রাম থেকে বল্লভপাড়া যাওয়ার বাসগুলি। কিন্তু সময়ের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। |
বেলডাঙায় ঘাটে নৌকা ধরতেই যেতে হচ্ছে মাঝ নদীতে। |
কালীগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের আলতাফ হোসেন বলেন, “আমরা আমাদের ব্লকের গোবরা পঞ্চায়েতকে বলেছি ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ওই বালির রাস্তা উঁচু করে তৈরি করতে যাতে বর্ষায় না ডুবে যায়। তবে ঘাটের টাকা যেহেতু কাটোয়া পুরসভা আদায় করে তাই তাদেরই দায়িত্ব দু’পাড়ের মানুনষকে পরিষেবা দেওয়া।” কাটোয়ার পুরপ্রধান কংগ্রেসের শুভ্রা রায় বলেন, “আমরা কাটোয়া ঘাটে জায়গা কিনে শৌচালয় ও প্রতীক্ষালয় তৈরি করেছি। লোহার ফুট ব্রিজ তৈরি করে গাড়ি পারাপারের জন্য আলাদা নৌকার ব্যবস্থা করেছি।” কাটোয়ার বিধায়ক কংগ্রেসের রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা কালীগঞ্জে শৌচালয় ও প্রতীক্ষালয় তৈরির জন্য জেলাশাসকের কাছে জমির আবেদন করেছি। আলোর ব্যবস্থা করার জন্য কালীগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির কাছে সাহায্য আশা করছি।”
আশ্বাসের সুতোয় এভাবেই ঝুলে রয়েছে ঘাটের পথ। |