গবেষণায় জলে-জঙ্গলে
ঙ্গাসাগর থেকে দার্জিলিং! রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলা ঘুরে স্থানীয় জনজাতিরা কী ভাবে গাছকে দেবতারূপে পুজো করে সংরক্ষণের কাজ করছেন তার তালিকা তৈরি করছেন বিশ্বভারতীর গবেষক তাপস পাল। গত ১৮ জানুয়ারি থেকে মোটর সাইকেলে ঘুরে প্রতিটি জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে যাচ্ছেন তাপসবাবু। তিনি স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলে ওই তথ্য সংগ্রহ করছেন। গত ৩৫ দিনে প্রায় ৫৪০০ কিলোমিটার বাইক চালিয়ে সুন্দরবন থেকে গড়বেতা, জঙ্গল মহল থেকে ডুয়ার্স ঘুরে ১৭৯১টি গাছ পুজোর তথ্য সংগ্রহ করছেন রায়গঞ্জের ছেলে তাপসবাবু। বর্তমানে তিনি শান্তিনিকেতনে থাকেন। তাপসবাবু বলেন, “গাছ সংরক্ষনের ঐতিহাসিক দিক নিয়ে গবেষণা করছি। জানুয়ারি মাস থেকে মোটরবাইক, ল্যাপটপ, ক্যামেরা নিয়ে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করছি। গাছ পুজোর জন্য এলাকাগুলিতে ওই গাছগুলি সংরক্ষিতও হচ্ছে।” গবেষণার জন্য তথ্য সংগ্রহে বার হয়ে তাপসবাবু দেখেছেন, সুন্দরবনে অশ্বথ, বট গাছকে বনবিবি রূপে, গঙ্গাসাগরে প্রতিটি বাড়িতে তুলসি ও ফনিমনসা গাছকে পাশাপাশি রেখে পুজো করা হয়।
তাপস পাল। নিজস্ব চিত্র।
পুরুলিয়ার আদ্রায় শেওড়া ও তেঁতুল গাছকে গ্রামদেবী রুপে পুজোর রেওয়াজ রয়েছে। পাকুড় গাছকে লালগড়ের আদিবাসীরা গরামথান, গড়বেতায় লোধা সম্প্রদায়ের মানুষেরা বট ও নিমকে সুরা চালসা রূপে পুজো করা হয়। এ ছাড়া কোথাও শ্যাওড়া ও বট গাছে পিরের মাজার তৈরি করে এবং কালী ও শিবের পুজো কোনও বড়মাপের গাছের নিচে মূর্তি বা মন্দির স্থাপন করে করা হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে গাছের কোনও ক্ষতি না করে বা না কেটে বছরের পর বছর এই পুজো চলছে। গ্রামের মানুষেরা তাঁদের অজান্তেই পরিবেশ রক্ষার গুরু দায়িত্ব পালন করে আসছেনয় তাপসবাবু জানান, গবেষণার কাজ শেষ হলে পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে কাজ করব। রাজ্যের ১৮টি জেলা ইতিমধ্যে ঘুরে ফেলছি। ডুয়ার্সের বক্সাব্যাঘ্র প্রকল্প লাগোয়া বিভিন্ন বনবস্তি এবং রাস্তার পুজো হওয়া বিভিন্ন গাছের নাম নথিভুক্ত করেছি। দার্জিলিঙেও ঘুরেছি। জলদাপাড়া জঙ্গলে সমীক্ষা করছি। এই কাজ শেষ হতে বেশ কয়েকদিন লাগবে। তাপসবাবুর কাজের প্রশংসা করেছেন হিমালায় নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের (ন্যাফ) মুখপাত্র অনিমেষ বসু। তিনি বলেন, “তাপসবাবুর গবেষণার বিষয়টি প্রশংসনীয়। ধর্মীয় রীতি মেনে গাছ সংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে আগে সেভাবে কাজ হয়নি।” তিনি জানান, দেশে নানা ধর্মের মানুষের বসবাস। সব ধর্মের ক্ষেত্রেই পরিবেশের গুরুত্ব এবং সংরক্ষণের বিষয়টি রয়েছে। আদিবাসীরা ময়না গাছকে করম উৎসবে পুজো করেন, কোথাও কলা গাছকে গণেশের স্ত্রী হিসাবে পুজো করা হয়। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা হলে তা পরবর্তীতে পরিবেশ রক্ষা ও গাছ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.