৫৫ ফুট উচ্চতার মণ্ডপ এবং চন্দননগরের ঝাঁ চকচকে আলোয় মেতে উঠেছে রামপুহাটের শিবরাত্রি উৎসব। আর এ সবেরই মূলে শহরের বিএসসি ক্লাব (ব্লুমিং সান কমিউনিটি ক্লাব)। সোমবার থেকে রামপুরহাট দেশবন্ধু রোডে বিএসসি ক্লাবের এই মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড়ে শিবরাত্রি উৎসব প্রথম দিনেই জমে উঠল।
কয়েকদিন আগে থেকেই এলাকার ব্যস্ত বহুল রাস্তার দু’ধারে সুউচ্চ বাঁশ পোঁতা চলছিল। তাই দেখে রামপুরহাটের বাসিন্দারা তো বটেই আশপাশের এলাকার বাসিন্দারাও বেশ বুঝতে পারছিলেন, শিবরাত্রি উৎসব এসে গেছে। উদ্যোক্তারা জানালেন, মানুষের সহযোগিতা পেয়ে প্রতিবারের মত এ বারও নতুন ধরণের মণ্ডপে ও আলোকসজ্জায় মানুষকে আনন্দ দিতে পেরে তাঁরা খুশি। মানুষকে আকর্ষণ করার জন্য এবার ক্লাবের শিবরাত্রি উৎসবের বাজেট প্রায় ৬ লক্ষ টাকা নির্ধারিত হয়েছিল। পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগর থানার পাঁওসি গ্রামের হস্তশিল্পীর একটি দল ২২ দিনের পরিশ্রমে দেশবন্ধু রোডের গলিতে গড়ে তুলেছেন ৫৫ ফুট উঁচু ওই মণ্ডপ। |
গোটা মণ্ডপটাই পাট দিয়ে তৈরি। রূপায়িত হয়েছে কাল্পনিক মন্দিরের আদলে। মণ্ডপের ভেতরে রয়েছে ২৫ ফুট উচ্চতায় দু’টি ঝাড়বাতি। মণ্ডপের ভেতরে ও বাইরে রাজপ্রাসাদের আদলে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন হস্তশিল্পের কাজ। তাতে যেমন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন কলগা তেমনি গাঁয়ের পাড়া, গাঁয়ের ভাঙা সেতু, চাষি ইত্যাদির রূপ। মণ্ডপের সামনে প্রায় ২০ ফুট জায়গায় রয়েছে পাট দিয়ে তৈরি ভারতমাতা। মণ্ডপ সজ্জায় সম্মান দেওয়া হয়েছে বঙ্কিমচন্দ্র, বিবেকানন্দ, রামমোহন, ঋষি অরবিন্দ, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, নেতাজি, ভগত সিংদের মত মনীষীদের। রবীন্দ্রনাথ সৃষ্ট দুই চরিত্র অমল ও দইওয়ালাকে মণ্ডপের কারুকার্যে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক প্রসঙ্গ যেমন ১০০ দিনের কাজ প্রভৃতিও এই মণ্ডপ সজ্জায় গুরুত্ব দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
মণ্ডপ শিল্পী মুকুল দলুই বলেন, “প্রায় ১৪ কুইন্টাল পাট দিয়ে মণ্ডপ সাজানো হয়েছে। উদ্যোক্তাদের পক্ষে সংস্থার সভাপতি দীনেশ তাপুরিয়া জানালেন, দর্শকদের আকর্ষণ করতে কোনও ফাঁক রাখা হয়নি। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে যেমন শিল্পী আনা হয়েছে তেমনি আলোর জন্য নিয়ে আসা হয়েছে চন্দননগরের শিল্পীদের। মুরারই বাঁশলৈয়ের প্রতিমা শিল্পী অনন্ত পালকে দিয়ে ওই মণ্ডপের প্রতিমা বানানো হয়েছে। |