নেপথ্যে ইভটিজিং, বলছেন এলাকাবাসী
দুর্ঘটনা ঘটিয়ে গ্রেফতার ছাত্র, পাল্টা ‘মার’
তীব্র গতিতে মোটরবাইক চালিয়ে রিকশায় ধাক্কা মারায় একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু আবাসিক ছাত্র। সেই রাগে কয়েক জনকে মারধর করা হয়েছে, সেই সঙ্গে লাগাতার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
বর্ধমান শহরে ঘটনার সূত্রপাত রবিবার বিকেলে। মারধর অভিযোগ ওঠে ওই রাতেই। সোমবার জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “বর্ধমান থানাকে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” কিন্তু রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রী আবাসগুলির আশপাশে প্রায় প্রতি দিনই দ্রুত বাইক ছুটিয়ে আসা-যাওয়া করতে দেখা যায় কিছু যুবককে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে-আসতে বা তারাবাগ হস্টেল থেকে বেরনো তরুণীদের নিয়মিত হেনস্থা করা হয়। রবিবার এই ভাবেই দুর্ঘটনা ঘটে যায় বলে এলাবাসীর একাংশের অভিযোগ। বাইকের ধাক্কায় পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন এক বৃদ্ধ রিকশাচালক। তিনি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ ওই দুর্ঘটনার পরে আফতাব রোডে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অরবিন্দ ও আইনস্টাইন রিসার্চ স্কলার ছাত্রাবাসের কিছু ছাত্র বাইক চালককে আটকে তার অভিভাবকদের ডাকতে বলেন। ছেলেটির বাড়ি শহরেরই শ্যামসায়র এলাকায়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরেও কোনও অভিভাবক না আসায় তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ দিন আদালতে তোলা হলে সে জামিনে ছাড়া পেয়েছে।
কিন্তু ছেলেটি গ্রেফতার হওয়ার পরেই তার বন্ধুবান্ধবেরা দুই হস্টেলের ছাত্রদের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। আইনস্টাইন ছাত্রাবাসের আবাসিক তারকেশ্বর সেনাপতির অভিযোগ, “মেয়েদের ভয় দেখাতেই ছেলেটি অত জোরে বাইক চালাচ্ছিল। কিন্তু থানায় পুলিশের সামনেই কিছু যুবক মোবাইলে আমাদের কয়েক জনের ছবি তুলে রাখে। ‘উচিত শিক্ষা দেব’ বলে হুমকিও দেয়।” বর্ধমান থানার আইসি স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “থানায় মোবাইলে ছবি তোলার কথা আমার জানা নেই। তবে হুমকির অভিযোগ খতিয়ে দেখছি।”
রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ থানা থেকে ফেরার পথেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অফ আর্ট অ্যান্ড ডিজাইনের (ক্যাড) সামনে ১০-১২ জন তাঁদের মারধর করে বলে আবাসিক ছাত্রদের অভিযোগ। অরবিন্দ ছাত্রবাসের পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “ওরা আমাদের মাঝরাস্তায় আটকে মারতে মারতে বাইকের চাবি কেড়ে নেয়।” অপর আবাসিক মনিরুল ইসলাম বলেন, “আমরা হস্টেলে ফোন করলে অন্যেরা চলে আসে। ওই ছেলেগুলো তখন পালিয়ে যায়। ওদের মধ্যে যাদের আমরা চিনতে পেরেছি, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি।”
কিন্তু এর পরেও হুমকি দেওয়া বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ। মনিরুলরা বলেন, “আমাদের কেউ হস্টেল থেকে বেরোলেই নানা কটূক্তি করা হচ্ছে। রাতে মারধর করা হবে বলা হচ্ছে। বাধ্য হয়ে আমাদের পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চাইতে হচ্ছে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেও তাঁরা নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন। রেজিস্ট্রার বলেন, “পুলিশ সুপারকে সব জানিয়েছি। রাতে গোলাপবাগ চত্বর ও সংলগ্ন এলাকায় উনি পুলিশ মোতায়েন করবেন বলেছেন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করা বন্ধ করতে পুলিশ কী করছে?
আইসি বলেন, “এক সময়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকত। ইভটিজিং কমে যাওয়ায় তা তুলে নেওয়া হয়েছিল। প্রয়োজনে আবার তা চালু হবে। কারা দ্রুত গতিতে বাইক চালাচ্ছে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
কয়েক বছর আগেই এক তরুণী কনস্টেবলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সাজিয়ে রাস্তায় নামিয়েছিল পুলিশ। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে প্রায় এক ভ্যান ‘ইভটিজার’ গ্রেফতার হয়। এ বারও তেমন কিছু করা হতে পারে?
পুলিশ সুপার বলেন, “আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। সময় মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.