বিমানের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে এটিসি-র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া বেশির ভাগ বিমানের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে গিয়েছে কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর। বিমানবন্দরের অফিসারদের আশঙ্কা, যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
যে ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবস্থা (ভিএইচএফ) শুক্রবার সকাল থেকে বিগড়ে যাওয়ায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে, সেটি বসানো রয়েছে ভুবনেশ্বরে। কলকাতা বিমানবন্দরের এটিসি থেকে বৈমানিকদের এই ঘটনার কথা জানিয়ে নোটিশ টু এয়ারমেন (নোটাম) জারি
করা হয়েছে।
শনিবার রাত পর্যন্ত ওই ভিএইচএফ ব্যবস্থা সারানো সম্ভব হয়নি। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের রিজিওনাল এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মনোহরলাল লাকড়া বলেছেন, “যে যন্ত্রাংশটি খারাপ হওয়ায় সমস্যাটি দেখা দিয়েছে, সেটি কলকাতা ও মুম্বইয়ে পাওয়া যায়নি। শনিবার সন্ধ্যাতেই জানা গিয়েছে ওই যন্ত্রাংশ রয়েছে চেন্নাইয়ে। সোমবার সেই যন্ত্রাংশ ভুবনেশ্বরে নিয়ে গিয়ে সারানো হবে।”
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে খবর, শুক্রবার সকাল থেকে চেষ্টা করেও ওই ভিএইচএফ ব্যবস্থা ঠিক করা যায়নি। যদিও রেডার ঠিকঠাক কাজ করায় বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া ওই সব বিমানের গতিবিধি বিমানবন্দরের মনিটরে ফুটে উঠছে। এটিসি অফিসারের কথায়, “শুধু দেখলেই তো হবে না। আমাদের কাজ তো প্রতিটি বিমানের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা। তার জন্য পাইলটকে প্রতিনিয়ত মৌখিক নির্দেশ পাঠাতে হয়। সেই নির্দেশ মেনে পাইলট বিমানের গতি, উচ্চতা, দিক নির্ণয় করেন। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকে তো যোগাযোগই করা
যাচ্ছে না।”
বিমানবন্দর সূত্রে খবর, কলকাতা থেকে উড়ে পোর্ট ব্লেয়ারের পথে ১৭৫ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৩২৪ কিলোমিটার) পর্যন্ত বিমানের সঙ্গে যোগাযোগ থাকছে এটিসি-র। কিন্তু তার পরেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে যোগাযোগ। প্রতি রাতে কলকাতার মাথার উপর দিয়ে প্রচুর সংখ্যক বিদেশি বিমান ইউরোপ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে যাতায়াত করে। শুক্রবার রাতে সেই সব বিমানের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেননি কলকাতার এটিসি অফিসারেরা। এক অফিসার জানিয়েছেন, দুর্ঘটনা এড়াতে ভুবনেশ্বরের রুটে, বঙ্গোপসাগরের উপরে (যেখানে মৌখিক যোগাযোগ থাকছে না) একই উচ্চতায় একাধিক বিমান রাখা হচ্ছে না। অফিসারের কথায়, “এর ফলে বিমানের গতি হয়তো কমে যাচ্ছে। সাধারণ দিনে বিমানের গতিবিধির উপরে নজর রেখে পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় বলে একই উচ্চতায় কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে একাধিক বিমানকে ওড়ার অনুমতি দেওয়া হয়।”
শুক্রবার সকাল থেকে আরও দু’টি উপায়ে বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমানের পাইলটদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। কলকাতার কাছের আকাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমানের পাইলটের মারফতে নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে দূরের বিমানকে। কারণ, দুই বিমানের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। লিখিত বার্তা পাঠিয়ে নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে পাইলটের কাছে। কিন্তু সেই বার্তা আদানপ্রদানে এতটাই সময় লাগছে যে একই উচ্চতায় একাধিক বিমান রাখার ঝুঁকি নেওয়া যাচ্ছে না। |