যে অপমানের বোঝা তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে গত কয়েক দিন ধরে বইতে হয়েছে, তার জন্য মানহানির মামলা করবেন লাভি গিদওয়ানি। তবে যে মহিলা অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধেই মামলা করবেন কি না, তা পরিষ্কার করে বলেননি তিনি। লাভির কথায়, “যারা আমার নাম ভাঁড়িয়ে ওই কাজ করেছে, তারা তো দোষী বটেই। আগে জানা যাক, আমার নাম কী ভাবে, কার মুখ থেকে প্রথম এল। তার পরে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করব। আমি ছাড়ব না।”
শনিবার রাতে কানাডায় ফোনে যোগাযোগ করা হয় বিজনেস ফিনান্সের প্রথম বর্ষের ছাত্র, ২৪ বছরের লাভি-র সঙ্গে। কলকাতা থেকে ফোনে যে সময়ে তাঁকে ধরা হয়েছিল, ঠিক তার পাঁচ মিনিট আগে বাবা রাজেশ গিদওয়ানির কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন, পুলিশ তাঁকে নির্দোষ হিসেবে ‘ক্লিনচিট’ দিয়েছে। লাভি বলেন, “আমি তো জানতামই, আমি নির্দোষ। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে কলকাতায় বসে পুলিশ, সংবাদমাধ্যম এবং অন্যরা এমন ভাবে প্রচার চালাল, যেন আমি সত্যিই ধর্ষণ করেছি। নীতির জন্য আপনারা ধর্ষিতা মহিলার নাম ও ছবি ছাপেন না ভাল কথা। কিন্তু যে ব্যক্তি অপরাধী হিসেবে প্রমাণিত হননি, তাঁর ছবি ও নাম ছেপে তাঁকে সমাজের চোখে অপরাধী বানিয়ে দেওয়ার অর্থ কী?”
দেড় মাস আগে আত্মীয়-বন্ধুরা লাভিকে কানাডায় রওনা হওয়ার সময় বিমানবন্দরে ছাড়তে এসেছিলেন। তাঁরা জানতেন লাভি কানাডায় রয়েছেন। কানাডায় নতুন যাঁরা বন্ধু হয়েছেন, যাঁরা ইন্টারনেটে প্রতিদিন কলকাতার খবরের কাগজ পড়েন, তাঁরাও অভিযোগ শুনে প্রথমে অবাক হয়েছেন। পরে হেসেছেন। কিন্তু লাভির অভিযোগ, “আমি নাহয় কানাডায় বসে আছি। লোকচক্ষুর আড়ালে। আমার দুই বন্ধু, আজহার ও শরাফত, যাদের আমি ছোট থেকে চিনি, যাদের পরিবারকে আমি ছোট থেকে জানি, তারা তো গত কয়েক দিন কলকাতার রাস্তায় হেঁটে বেড়িয়েছে। কত শত-সহস্র চোখের গা-জ্বালানো দৃষ্টি সহ্য করতে হয়েছে তাদের। আমার বাবা-মাকে কতটা অপমান সহ্য করতে হয়েছে!!”
এই ঘটনার দু’বছর পরেও তিনি যখন কলকাতায় আসবেন, তখনও লোকে তাঁর দিকে ‘অন্য দৃষ্টি’তে দেখতে পারে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন লাভি। তাঁর কথায়, “আমাদের মানসিকতাই হল, এক বার যার নাম নিয়ে এত জলঘোলা হয়েছে, তাকে অস্বস্তিকর দৃষ্টি সহ্য করতেই হয়!” পুলিশের এক অফিসার শুক্রবার ফোন করে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন। শনিবার রাতে বাবার ফোন পেয়ে জানতে পারেন আসল অপরাধীরা ধরা পড়েছে। লাভি বলেন, “যে ভাবে সত্য উদ্ঘাটিত হয়েছে, তাতে পুলিশের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।” |