নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
বিশ্বে চায়ের বাজারে কেনিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনামের মতো দেশগুলির উত্থান ভারতের চা শিল্পদ্যোগীদের প্রতিযোগিতার সামনে ফেলে দিয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দক্ষতা এবং তৎপরতা বাড়িয়ে চা শিল্পোদ্যোগীদের কী ভাবে নিজেদের জায়গা ধরে রাখতে হবে শনিবার তা নিয়েই সেমিনার হল শিলিগুড়িতে। ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’র উদ্যোগে শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়ির একটি হোটেলে তরাইয়ের বিভিন্ন চা বাগান মালিকদের নিয়ে ওই সেমিনার হয়। ভারতীয় চা পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতের চা রফতানির পরিমাণ গত কয়েক বছর কমেছে। ২০১২ থেকে আগামী ৫ বছরে ২২০ মিলিয়ন কিলোগ্রাম চা রফতানির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তা পূরণ করার পাশাপাশি উৎপাদন বাড়ানো এবং চায়ের গুণগত মান বৃদ্ধি জরুরি বলে মনে করেন কর্তৃপক্ষ।
ভারতীয় চা পর্ষদ এবং বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অব প্লান্টেশন ম্যানেজমেন্ট (আইআইপিএম) এ দিনের সেমিনারে সহায়তা করেছে। চা পর্ষদের ডেপুটি ডিরেক্টর কল্যাণ কুমার ভট্টাচার্য জানান, দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গুণগত মানোন্নয়ন এবং উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গ তো বটেই দেশের চা শিল্পোদ্যোগীরা নানা সমস্যায় পড়ছেন। দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দেশের চা শিল্পের উন্নয়নের জন্য পর্ষদের তরফে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার পরিকল্পনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ১৬৭৮ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট দফতরের পরিকাঠামো উন্নয়ন, গবেষণা, বিপণনের পরিকাঠামো উন্নয়নের মতো কাজে ব্যবহার হবে। যদিও কী পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ মিলবে তার উপর ভিত্তি করেই পরিকল্পনা মাফিক কাজ এগোবে। তিনি বলেন, “২০১২ সাল থেকে আগামী ৫ বছরে ২২০ মিলিয়ন কিলোগ্রাম চা রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত বছর দেশে চা উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৯৮৬ মিলিয়ন কিলোগ্রাম। তার প্রায় ৮৫ শতাংশ দেশের বাজারেই বিক্রি হয়। উৎপাদিত চায়ের ২৮ শতাংশ আসে ছোট চা বাগানগুলি থেকে। তাদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিও কারখানা গড়তে উৎসাহী হচ্ছে।”
এ দিন সেমিনারে বক্তব্য রাখেন আইআইপিএম-এর মানব সম্পদ উন্নয়ন বিভাগের প্রধান তথা এ দিনের সেমিনারের পরিকল্পনার দায়িত্বে থাকা আনন্দ দাশগুপ্ত, কলকাতার ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউটের প্রাক্তন শিক্ষক ত্রিদিব চক্রবর্তী। আনন্দবাবু বলেন, “বিশ্ব বাজারে চা রফতানির ক্ষেত্রে ‘প্যাকেজিং’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে উৎপাদন বাড়াতে বাগান, কারখানা পরিচালনার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের মনোভাব পরিবর্তন জরুরি।” ত্রিদিববাবু জোর দেন কর্মসংস্কৃতি গড়ে তোলার দিকে। টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার অতিরিক্ত সচিব সুমিত ঘোষ জানান, তরাইয়ের চা বাগানগুলির কর্তৃপক্ষদের নিয়েই মূলত এ দিন সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে অন্যত্র সেমিনার হবে। |