উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চাঁচল ডিপো তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ ও ডিপো ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দারা। শুক্রবার মালদহের চাঁচলে ঘটনাটি ঘটে। এদিন নাগরিক মঞ্চের উদ্যোগে ওই অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামিল হন চাঁচল ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরাও। নাগরিক মঞ্চের ওই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন চাঁচলের কংগ্রেস বিধায়ক আসিফ মেহবুব ও মালতিপুরের আরএসপি বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সিও। সম্প্রতি চাঁচল ডিপোকে মালদহের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্তের কথা জানার পরই মহকুমা সদর জুড়ে সোরগোল পড়ে যায়। তার পরেই সর্বস্তরের মানুষ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে নাগরিক মঞ্চ গড়ে তোলা হয়। শুক্রবার মঞ্চ-সহ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা চাঁচল ট্রাফিক মোড়ে এক ঘন্টা ধরে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। এর পরে পথসভা করে ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদও জানানো হয়। পরে মিছিল করে ডিপোয় গিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পরে কর্তৃপক্ষের হাতে একটি স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত ডিপো ইনচার্জ প্রমোদ দাস বলেন, “এ বিষয়ে কিছু বলা বা করার এক্তিয়ার আমার নেই। মঞ্চের দাবির কথা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।” |
১৯৬২ সালে চাঁচলে জেলার ওই দ্বিতীয় ডিপোটি গড়ে ওঠে। একসময় চাঁচল ডিপোর যথেষ্ট সুনাম থাকলেও বর্তমানে নানা সমস্যায় এটি ধুঁকছে। ৬৬ জন কর্মী থাকলেও বাস চলে তিনটি। কর্মীদেরও অভিযোগ, এই ডিপোটিকে সবসময়ই বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আরও গাড়ির সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানানো হলেও তা হয়নি। পরিত্যক্ত গাড়ি পাঠিয়ে সমস্যা সামাল দেওয়া হত। কয়েক বছর আগে ডিপোর আরও ভালো পরিকাঠামো গড়ে তোলার পরিকল্পনা হয়। সদরের বাইরে কলিগ্রাম এলাকায় ২২ বিঘা জমিও কেনা হয়। জমিদাতা বেশ কয়েকজনের সংস্থায় চাকরিও হয়। ডিপোর হাল ফেরানোর কথা না ভেবে এখন তা কেন ‘তুলে দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে’ তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে সরব হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন বাসিন্দারা। নাগরিক মঞ্চের অভিযোগ, রেল যোগাযোগহীন চাঁচলে একমাত্র ভরসা সড়ক যোগাযোগ। তাও প্রয়োজনের তুলনায় কম। মঞ্চের তরফে চাঁচল পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য ও আইএনটিইউসি নেতা দেবব্রত ভোজ, সিটু নেতা মনওয়ার আলম বলেন, “যে ভাবেই হোক, চাঁচল ডিপো তুলে দেওয়া রোখা হবে। প্রয়োজনে জঙ্গি আন্দোলন হবে।” বিধায়ক আসিফ মেহবুব বলেন, “৫ দশকের ওই সংস্থার সঙ্গে চাঁচলের মানুষের আবেগ জড়িত। ডিপো যাতে না ওঠে সেজন্য সর্বস্তরে কথা বলব।” একই কথা বাম বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি-র। |