দীর্ঘ দিনের চেষ্টার পরে অস্ত্রপাচার চক্রের এক পাণ্ডাকে গ্রেফতার করল মুর্শিদাবাদ থানার পুলিশ। তার নাম সাদিকুল ইসলাম। বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ও জাল টাকা পাচারের অভিযোগে মোট ৭ জনকে মুর্শিদাবাদের পুলিশ শুক্রবার গ্রেফতার করছে। ধৃতদের কাছ থেকে নাইন এমএম পিস্তল এবং ওয়ান সটার মিলিয়ে ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৩৫ রাউন্ড গুলি এবং জাল ৫০ হাজার টাকা আটক করেছে পুলিশ।
সাদিকুলকে গ্রেফতার করার জন্যে মুম্বই পুলিশ বছর দু’য়েক আগে মুর্শিদাবাদে বেশ কিছু দিন ঘাঁটি গেড়ে পড়েছিল। তখন তার হদিস না পেয়ে মুম্বই পুলিশকে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেতে হয়। জাল টাকার আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের পাণ্ডা সাদিকুলকে অবশেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় দৌলতাবাদ বাস স্টপ থেকে জেলা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃত ওই বাংলাদেশি নাগরিকের কাছ থেকে ১০০০ টাকার ৫০টি জাল নোট পুলিশ উদ্ধার করছে বলে জানান পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর।
হুমায়ুন কবীর বলেন, “সাদিকুল ইসলাম নামের ওই বাংলাদেশি নাগরিকের বাড়ি নবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানা এলাকায়। তার কাছ থেকে জাল ৫০ হাজার টাকা ছাড়াও আমেরিকান ১০০ ডলার, পাসপোর্ট ও ভিসা আটক করা হয়েছে। জাল টাকা পাচারের ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার জন্য বছর দু’য়েক আগে মুম্বই পুলিশ বেশ কিছু দিন এ জেলায় ঘাঁটি গেড়ে ছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় ধৃত সাদিকুলকে মুম্বই পুলিশ এবং সিআইডি পৃথক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।”
পুলিশ জানায়, সাদিকুলের সঙ্গে ধৃত বদরুদ্দোজার বাড়ি জলঙ্গি থানার খয়রামারি গ্রামে। সাদিকুল বাংলাদেশের ৩৮০ টাকায় ভারতীয় ১০০০ টাকার একটি জাল নোট কিনে এ দেশে তা ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি করে বলে অভিযোগ। সাদিকুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জাল টাকার আন্তর্জাতিক পাচারচক্রের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে বলে পুলিশের অনুমান। গত দেড় বছরে পাসপোর্টে তিন বার এ দেশে এসেছে বলে সে জানিয়েছে। কিন্তু পুলিশ সুপার মনে করেন, “ধৃতের একাধিক পাসপোর্ট রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বছর চারেকের মধ্যে সে অন্তত ১৯ বার এ দেশে এসেছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে মনে করা হচ্ছে।” বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবার করার অপরাধে বাংলাদেশের জেলে ১৪ বছর বন্দি ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকল থানার দক্ষিণ গরিবপুর গ্রামের ওহাব শেখ। কারদণ্ডের মেয়াদ শেষ হলেও বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের নেশা কিন্তু ছাড়তে পারেনি ৬২ বছরের প্রৌঢ় ওহাব শেখ। শুক্রবার রাতে ৭.৭৫ বোরের ৪টি পিস্তল, ৪টি ম্যাগাজিন এবং ২৮ রাউন্ড গুলি-সহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওহাবের দুই সঙ্গীকেও পুলিশ একই সঙ্গে গ্রেফতার করেছে। অস্ত্র পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত ওই দু’জনের নাম লালু শেখ ও হুব্বাস শেখ। লালুর বাড়ি নওদা থানার গঙ্গাধারী গ্রামে ও হুব্বাসের বাড়ি নওদা থানার দুর্লভপুর গ্রামে।
ওই রাতেই ডোমকল থানার বর্তনাবাদ গ্রামের কাছ থেকে বেআইনি অস্ত্র কারবারে অভিযুক্ত আর দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম জামরুল শেখ ও মাজহারুল ইসলাম। বাড়ি ডোমকল থানার বর্তনাবাদ লাগোয়া ফকিরপাড়া গ্রামে। |