|
|
|
|
ইউনিটে বৃদ্ধি ৪৪ পয়সা |
ফুয়েল সারচার্জ মারফত বিদ্যুতের দর বাড়াচ্ছে বণ্টন |
পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় • কলকাতা |
রাজ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে আরও এক দফা। চলতি মাসেই জ্বালানি খরচ (ফুয়েল সারচার্জ) বাবদ ইউনিটপিছু বাড়তি ৪৪ পয়সা গ্রাহকদের থেকে আদায় করা শুরু হবে বলে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি সূত্রে জানা গিয়েছে। গত ডিসেম্বরে বণ্টন সংস্থার বিদ্যুতের মাসুল ৪৪ পয়সা বেড়েছিল। জানুয়ারিতে ৩৮ পয়সা অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ যোগ হয়। আর এ বারের ফুয়েল সারচার্জ বৃদ্ধির ফলে বণ্টন এলাকায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম দাঁড়াচ্ছে ৫ টাকা ৫৩ পয়সা।
আগে জ্বালানি খরচ বাড়লে উৎপাদক সংস্থাগুলোকে বাড়তি মাসুল আদায়ের অনুমতি বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন দিয়ে থাকত বছরের শেষে। ২০১১-র এপ্রিল ইস্তক নিয়মটা বদলে গিয়েছে। এখন বিদ্যুৎ সংস্থাগুলোই ফি মাসে নিজেদের আয়-ব্যয়ের হিসেব কষে গ্রাহকদের বিল তৈরি করতে পারে। বছর শেষে কমিশন তা পরীক্ষা করে দেখে নেয়। সেই সূত্র ধরেই নতুন ভাবে জ্বালানি খরচ বসছে বলে বিদ্যুৎ-কর্তাদের দাবি। এক কর্তার ব্যাখ্যা: গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কোল ইন্ডিয়ার কয়লার দাম এক লাফে অনেকটা বেড়েছে। তারই প্রতিক্রিয়া হিসেবে গত দু’মাসে এ নিয়ে ফুয়েল সারচার্জ বাড়ল ৮২ পয়সা।
এবং এই বৃদ্ধিতে গ্রাহকদেরও সুবিধা বলে দাবি করছেন বণ্টন-কর্তৃপক্ষ। তাঁদের যুক্তি: কয়লার দাম বাড়লে বাড়তি খরচের দায় বছরের শেষে এক সঙ্গে গ্রাহকের উপরে চাপলে তা বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আবার খরচ বাড়লে বাজার থেকে ঋণ নিতে হয়, তার সুদও চাপে গ্রাহকের ঘাড়ে। কিন্তু প্রতি মাসে যদি খরচের হিসেব কষে মাসুল স্থির করা যায়, তা হলে বিদ্যুতের দাম এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়তে পারে না। “এমনকী, খরচ কম হলে মাসুল দু’-চার পয়সা কমে যাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।” বলেন এক অফিসার।
আয়-ব্যয়ের হিসেবের প্রেক্ষিতে বণ্টন সংস্থার কর্তারা অনেক দিন ধরেই দাবি করে আসছিলেন যে, তাঁদের বিদ্যুতের দাম হওয়া উচিত কমপক্ষে সাড়ে পাঁচ টাকা। অথচ রাজ্যে নতুন সরকার আসার পরে মাসুলবৃদ্ধির অনুমতি না-মেলায় চলতি অর্থবর্ষের (২০১১-’১২) প্রথম আট-ন’মাস বণ্টন সংস্থার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো যায়নি। ফলে ওই সময়ের মধ্যে কোম্পানির হাজার কোটি টাকারও বেশি লোকসান হয়ে যায়।
উপরন্তু প্রভূত দেনার বোঝা চেপে যাওয়ায় ব্যাঙ্কগুলোও ঋণ দিতে চায়নি। বস্তুত বণ্টন-কর্তারা ধরেই নিয়েছিলেন, এমন অবস্থা চলতে থাকলে চলতি অর্থবর্ষের শেষে কোম্পানির লোকসানের বহর দাঁড়াবে প্রায় ২২০০ কোটি টাকায়।
এ হেন সঙ্কটের মুখে কিছুটা স্বস্তি আনে স্থগিত থাকা মাসুলবৃদ্ধি কার্যকর করার অনুমতি। বাম আমলের শেষাশেষি ওই বর্ধিত মাসুল আদায় শুরু হলেও ট্রাইবুন্যালের রায়ে পরে তা বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। গত ডিসেম্বর-জানুয়ারি থেকে সেটি ফের আদায় করা হচ্ছে। বাড়তি আয়ের সংস্থান হওয়ায় আসন্ন গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখার ব্যাপারে কর্তারা আশাবাদী। এখন ফুয়েল সারচার্জ আরও বাড়ার ফলে লোকসানের অনেকটাই ধাপে ধাপে পূরণ করা যাবে বলে বণ্টন সংস্থার কর্তারা মনে করছেন। |
|
|
|
|
|