লরিতে পিষ্ট ছাত্রী, রাস্তা কাটলেন বাসিন্দারা
গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যাওয়ার সময়ে রাস্তায় লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। জখম হয়েছে তার সহপাঠী। দুর্ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ জনতা রাস্তা সারানোর দাবিতে তিন ঘণ্টা মৃতদেহ ফেলে রেখে বিক্ষোভ দেখায়। শুক্রবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর থানার গলদা গ্রামের মোড়ে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সাহানারা খাতুন (২০)। বাড়ি স্থানীয় গলদা গ্রামের পাকা মাজার এলাকায়। সে স্থানীয় পশ্চিম জয়নগর হাইস্কুলের ছাত্রী। বিক্ষোভকারীরা রাস্তা কেটে দেওয়ার ফলে বসিরহাটের সংগ্রামপুর এবং স্বরূপনগরের মধ্যে রাত পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ ছিল। মৃতদেহ তুলতে গেলে পুলিশকে বিক্ষোভের মধ্যে পড়তে হয়।
আগামী সপ্তাহ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। সাহানারা ও তার বান্ধবী নূরজাহান মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সে কারণে তাদের পড়াশোনার বেশ চাপ ছিল। এ দিন সকালে নুরজাহানের সাইকেলের পিছনে বসে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যাচ্ছিল তারা।
সাহানারা।
সংগ্রামপুর-স্বরূপনগর সড়কে গলদা রাস্তার মোড়ে সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ একটি বালি বোঝাই লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাইকেলে ধাক্কা মারে। দুই বন্ধু রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে। লরির চাকায় পিষে যায় সাহানারা। ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। মৃতদেহ ফেলে রেখে বিক্ষোভ শুরু হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা খারাপ থাকার জন্য প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তাটি এলাকাবাসীর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সীমান্ত বাণিজ্যের জন্যও রাস্তাটি ব্যবহার হয়। অনেক লরি ওই রাস্তা দিয়ে ঘোজাডাঙাতে যায়। গাড়ি নিয়ে যাওয়া তো দূরের কথা, পায়ে হাঁটাও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।
রাস্তা না সারানোর প্রতিবাদে রাস্তা
কেটে দিচ্ছেন স্থানীয় মানুষ
শোকার্ত পরিবার।
ছবি: নির্মল বসু।
প্রসঙ্গত: বৃহস্পতিবার ওই রাস্তায় কাটিয়াহাটের কাছে গন্ধর্বপুরে বেহাল রাস্তার গর্তে পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কাদারবিলে উল্টে গিয়েছিল যাত্রী বোঝাই বাস। ছয় মহিলা-সহ বেশ কয়েক জন জখম হয়েছিলেন।
দুর্ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরে বাড়ি সাহানারাদের। ছয় সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে সাহানারার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন রসিদ মণ্ডল। জ্ঞান হারাচ্ছেন তাঁর স্ত্রী রেহেনাবিবি। কাঁদছেন আর বলছেন, “মেয়েটা পড়তে যাওয়ার সময়ে বলে গেল বাড়ি ফিরে ভাত খাবে। থালা নিয়ে বসে রয়েছি। ও আর ফিরল না।” সেখান থেকে কিছু দূরে বাড়ি নূরজাহানের। চোখের সামনে বন্ধুর মৃত্যু দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েছে সে। সে বলে, “আমি সাইকেল চালাচ্ছিলাম। ও পিছনে বসেছিল। দু’জনে কথা বলতে বলতে যাচ্ছিলাম। বাজারের কাছে আচমকা রাস্তার গর্তে সাইকেলের চাকা পড়ে। বেসামাল হয়ে যাই। আমি রাস্তার পাশে পড়ি। ও রাস্তার উপরে।” সে সময়ে তেঁতুলিয়ার দিক থেকে আসা একটি লরি সাহানারার মাথার উপর দিয়ে চলে যায়।
এ দিনের ঘটনার পরে উত্তেজিত বাসিন্দারা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। শুরু হয় রাস্তা খোঁড়ার কাজ। গভীর ভাবে রাস্তা কেটে দেওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ গিয়ে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। তিন ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ চলার পরে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শীঘ্রই রাস্তা মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.