মাজদিয়ার সুধীরঞ্জন লাহিড়ি মহাবিদ্যালয় ছাড়া জেলার কলেজ নির্বাচন কাটল মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভাবেই।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুক্রবার নদিয়ার সাতটি কলেজে দিনভর ছিল টানটান উত্তেজনা। কলেজে কলেজে মোতায়েন করা হয়েছিল প্রচুর পুলিশকর্মী। এদিন সকাল থেকেই আবহাওয়া ভালো থাকায় ছাত্রছাত্রীরা বেশ সকাল থেকেই কলেজের প্রবেশপথের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন। বেলা যত গড়িয়েছে ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিজয়ী সংগঠনের ছাত্ররা ফেটে পড়েছে উল্লাসে। |
ছাত্র সংসদ নির্বাচন নদিয়ায়। কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজ চত্বরে সতর্ক পুলিশ। |
আকাশ ঢেকেছে কোথাও লাল কোথাও সবুজ আবিরে। বিকেল অব্দি জেলার কোথাও কোনও গন্ডগোলের খবর না আসায় একপ্রকার নিশ্চিন্তেই ছিল প্রশাসন। কিন্তু শেষ বেলায় মাজদিয়া কলেজে গন্ডগোলের ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ে প্রশাসনের। যদিও শেষপর্যন্ত প্রশাসনের তৎপরতায় পরিস্থিতি পুরেপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। জেলার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র বলেন, ‘‘দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বিঘ্নেই শেষ হয়েছে কলেজ নির্বাচন। নির্বাচন প্রক্রিয়া অবাধ ও শান্তিপূর্ণ রাখতে আমরা সব রকমভাবেই প্রস্তুত ছিলাম। ৭ টি কলেজে নির্বাচনের জন্য ১০০ জন মহিলা পুলিশকর্মীসহ মোট ৩৫০ জন পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। তার মধ্যে ১০০ জন ছিলেন অফিসার পর্যায়ের।’’ সকাল থেকে নির্বাচনকে ঘিরে ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। বিভিন্ন সংগঠনের সমর্থকেরা কলেজের কাছাকাছি এলাকায় পতাকা ও ফেস্টুন টাঙিয়ে ছোট ছোট শিবির বানিয়েছিলেন। সেখানে শুধু প্রার্থী বা সমর্থকেরাই নন, ভিড় জমিয়েছিলেন বহুদিন আগে কলেজের পাঠ শেষ করে বেরিয়ে যাওয়া প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরাও। কলেজের আশপাশে তৈরি হওয়া ওই অস্থায়ী শিবিরগুলিতে হালকা মেজাজে ঘুরতে দেখা যায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা ও কর্মীদেরও। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনের ফলাফল নিয়েও চড়তে থাকে উত্তেজনার পারদ। |
ছাত্রছাত্রীদের পরিচয়পত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে করিমপুরে। |
তবে কলেজের ভিতরে মোবাইল নিয়ে যাওয়ার কোনও অনুমতি না থাকায় রীতিমতো বিপাকে পড়ে গিয়েছিলেন ছাত্র ছাত্রীরা। কিন্তু নিয়ম যে বড় বালাই, তাই কিছুটা বাধ্য হয়েই সর্বক্ষণের সঙ্গীকে এদিন বাইরে রেখেই কলেজে ঢুকতে হয়েছে। এক কলেজ ছাত্রের কথায়, ‘‘কলেজের ভিতর ব্যাগ, মোবাইল কিছুই নিয়ে যেতে দেয়নি। তাতে শান্তি অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছিল। বাইরে থেকে কেউ কলেজের ভিতরে ফোনে কোনও নির্দেশ পৌঁছে দিতে পারেনি।’’ |
জয়ের পরে কৃষ্ণনগরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উল্লাস। |
এসএফআই এর নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক কৌশিক দত্ত বলেন, ‘‘আমরা আগেও বলেছিলাম সন্ত্রাস করে কলেজগুলোতে আমাদের প্রার্থী দিতে দিচ্ছে না তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। ভোটের ফলাফল প্রমাণ করে দিল যদি কলেজগুলোতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোট হত, তাহলে ওদের খুঁজেই পাওয়া যেত না।’’ ছাত্র পরিষদের জেলার নেতা অর্ঘ্য গণ বলেন, ‘‘এই ফল বলে দিচ্ছে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সর্বত্র নির্বাচন হলে আমাদের প্রতিই ভরসা রাখতেন ছাত্রছাত্রীরা।’’ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি জয়ন্ত পাল বলেন, ‘‘কেন এমন ফল হল তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’’ |
কল্যাণী মহাবিদ্যালয় : জয়ী- তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ছিল- এসএফআই
হরিণঘাটা কলেজ : জয়ী- তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ছিল- এসএফআই
চাকদহ কলেজ : জয়ী- তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ছিল- এসএফআই
রানাঘাট কলেজ : জয়ী- তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায়), ছিল- জোট
নবদ্বীপ কলেজ : জয়ী- তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ছিল- ছাত্র পরিষদ
কৃষ্ণনগর দ্বিজেন্দ্রলাল কলেজ : জয়ী- তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ছিল- এসএফআই
কৃষ্ণনগর গভ: কলেজ : জয়ী- তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ছিল- এসএফআই
বিপ্রদাস পাল চৌধুরী ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি : জয়ী- তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ছিল- এসএফআই
আসাননগর মদনমোহন তর্কালঙ্কার কলেজ : জয়ী- তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ছিল- জোট
বেথুয়াডহরি কলেজ : জয়ী- তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ছিল- এসএফআই
কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজ : জয়ী- তৃণমূল ছাত্র পরিষদ, ছিল- তৃণমূল ছাত্র পরিষদ
মাজদিয়া সুধীররঞ্জন লাহিড়ী কলেজ : জয়ী- এসএফআই, ছিল- তৃণমূল ছাত্র পরিষদ
চাপড়া বাঙালঝি কলেজ : জয়ী- এসএফআই, ছিল- এসএফআই
শান্তিপুর কলেজ : জয়ী- ছাত্র পরিষদ, ছিল- জোট
বেতাই বি আর অম্বেডকর কলেজ : জয়ী- ছাত্র পরিষদ, ছিল- জোট
বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজ : জয়ী- ছাত্র পরিষদ, ছিল- জোট
করিমপুর পান্নাদেবী কলেজ : সর্বোচ্চ আসন- ছাত্র পরিষদ, ছিল- ছাত্র পরিযদ |
|