পূর্ব কলকাতা
আলোর আভাস
আঁধার সরণি
বিদ্যুতের খুঁটি আছে। কিন্তু আলো নেই। দোকানের যৎসামান্য আলোই ভরসা। যেখানে দোকান নেই সেখানে ঘুটঘুটে অন্ধকার। ফলে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। রয়েছে চুরি-ছিনতাইয়ের আশঙ্কাও। তাই সন্ধ্যার পরে এলাকার মানুষ এই পথ এড়িয়ে চলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সব জেনেও পঞ্চায়েত কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এই অবস্থা রাজারহাট ব্লকের রাজারহাট-বিষ্ণুপুর-২ নম্বর পঞ্চায়েতের বিষ্ণুপুর বটতলা থেকে পাথরঘাটা পঞ্চায়েতের পাথরঘাটা বাজার পর্যন্ত ২১১ নম্বর বাস রাস্তার।
পাথরঘাটাগামী এই রাস্তায় ২১১ নম্বর রুটের বাস ছাড়াও অটো আর যাত্রীবাহী ট্রেকার চলে। রাস্তাটি রাজারহাট-বিষ্ণুপুর-২ নম্বর এবং পাথরঘাটা পঞ্চায়েতের অন্তর্ভুক্ত। দৈনিক কয়েক হাজার মানুষ এই রাস্তা ব্যবহার করেন। রাস্তাটি নিউটাউনগামী অন্য কয়েকটি রাস্তার সঙ্গেও যুক্ত। ফলে অনেকেই এই রাস্তা দিয়ে নিউটাউন যান। বটতলা থেকে ছোট চাঁদপুরের মোড় পর্যন্ত রাস্তার ধারে কয়েকটি আলো লাগানো আছে। এর পরে রাস্তার ধারে বিক্ষিপ্ত ভাবে গড়ে ওঠা কয়েকটি দোকান ও বাজারের অংশগুলি বাদ দিলে পাথরঘাটা বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তায় কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। বাজার বা দোকান বন্ধ হয়ে গেলে পুরো রাস্তাই অন্ধকারে ডুবে যায়।
সন্ধ্যার পরে এই রাস্তা দিয়ে যেতে গেলে বিপাকে পড়তে হয়। বিশেষ করে সাইকেল, মোটরসাইকেল এবং পথচারীরা বেশি অসুবিধায় পড়েন। অন্ধকারে প্রাণ হাতে করে চলতে হয়। মাঝেমধ্যে গাড়ির তীব্র আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যায়। তা ছাড়া রাস্তার কিছু অংশ বসতি না থাকায় অনেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন মণ্ডল বলেন, “কাছেই নিউটাউন বলে অনেক রাত পর্যন্ত যাতায়াত চলে। অন্ধকারে খুবই অসুবিধা হয়। প্রশাসন দীর্ঘ দিন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।” অসুবিধা হয় যানচালকদেরও। এই পথে দীর্ঘ দিন ট্রেকার চালান শ্যামল মণ্ডল। তাঁর কথায়: “আলো না থাকায় রাতে যাতায়াত করতে অসুবিধা হয়। উল্টো দিকের গাড়ির আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যায়। তখন নিয়ন্ত্রণ হারানোর আশঙ্কা থাকে।”
পাথরঘাটা পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের অশোক নস্কর বলেন, “পঞ্চায়েতের রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ কম। তাই রাস্তার আলোর খরচ পঞ্চায়েত তহবিল থেকে বহন করা সম্ভব হয় না। এ বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতি ও হিডকো-কে লিখিত ভাবে জানাব।” রাজারহাট-বিষ্ণুপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের মান্নান গাজির কথায়: “রাস্তায় ভেপার ল্যাম্প লাগানোর জন্য সাংসদ তহবিল থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা অনুমোদন হয়েছে। মাসখানেকের মধ্যে কাজ শুরু হবে।”
রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের জাহানারা বিবি বলেন, “রাস্তার আলোর জন্য সাংসদ অর্থ অনুমোদন করেছেন। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। এই অর্থেও পুরো কাজ না হলে আবার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ছবি: সুদীপ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.