উরসে মিলন দুই বাংলার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
উরস উৎসব ঘিরে চিরাচরিত উৎসাহ-উদ্দীপনার ছবিই শুক্রবার দেখা গেল মেদিনীপুর শহরে। উৎসবে যোগ দিতে এ দিন সকালে বাংলাদেশ থেকে বিশেষ ট্রেন এসে পৌঁছয় মেদিনীপুরে।
ও-পার বাংলার মানুষদের অভ্যর্থনা জানাতে স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি, পুরপ্রধান প্রণব বসু, উপ-পুরপ্রধান এরশাদ আলি প্রমুখ। ধর্মপ্রাণ মানুষদের হাতে গোলাপ তুলে দেওয়া হয়। বিশেষ ট্রেনে এ বার ১৮৬৫ জন এসেছেন। তাঁদের মধ্যে ১০৮৩ জন পুরুষ, ৬৯৬ জন মহিলা ও ৮৬টি শিশু। উৎসব শেষে আজ, শনিবার রাতেই মেদিনীপুর ছেড়ে ফের বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেবে ওই ট্রেন। |
|
’উরস উপলক্ষে মেদিনীপুরের জোড়া মসজিদে প্রার্থনা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
শুধু ও-পার বাংলাই নয়, এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকেও বহু ধর্মপ্রাণ মানুষ এসেছেন শহরে। মেদিনীপুর শহরের জোড়া মসজিদে প্রতি বছর ৪ ফাল্গুন দিনটি পালন করা হয়। সাধক সুফি সৈয়দ শাহ মুরশেদ আলি আলক্কাদরি আল বাগদাদি আলাজাদ্দেহি-র ১১১ তম উরস হচ্ছে এ বার। এই উপলক্ষে শহরে মেলাও বসেছে। সকাল থেকেই মেলা প্রাঙ্গণে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের ভিড় জমতে শুরু করে। এর পর বেলা যত গড়িয়েছে, ভিড়ও ততই বেড়েছে। এলাকায় বাড়তি পুলিশও মোতায়েন করা হয়। |
|
বাংলাদেশ থেকে এল তীর্থযাত্রীদের বিশেষ ট্রেন। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
খোলা হয়েছে মেডিক্যাল ক্যাম্প। মেলায় প্রচুর মানুষের সমাগমে ব্যবসায়ীরাও খুশি। বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ বাসে করেও এখানে এসেছেন। বাংলাদেশের রাজবাড়ির ‘আঞ্জুমান-ই-কাদেরিয়া’র সভাপতি ইরাদত আলি বলেন, “১৯০২ সাল থেকে এই ট্রেন আসছে। উরস যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে এখন ভারত ও বাংলাদেশ--দু’দেশের উদ্যোগে এই বিশেষ ট্রেন চলে। আশা করি, বছরের পর বছর ধরেই এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।” বিশেষ ট্রেনে করেই মেদিনীপুরে এসেছেন ও-পার বাংলার সাংসদ মঞ্জুর কাদের কুরেশি। তাঁর কথায়, “ভারত সরকার সব রকম ভাবেই সহযোগিতা করে। বাংলাদেশের বহু মানুষ এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন।” সব মিলিয়ে উরস উৎসব ঘিরে মেদিনীপুর শহরে দুই বাংলা যেন মিলেমিশে একাকার।
|
|