দ্রুত শিখে নিচ্ছে ছটফটে দ্বারকা
নের পাশে রাস্তায় চলতে চলতে হঠা মাহুত ‘ধাত্’ চেঁচিয়ে উঠতেই দ্বারকাপ্রসাদ মুহূর্তের মধ্যে থমকে গেল। পিঠের একপাশে ঝুলে থাকা ঘাস ও লতাপাতা ঠিকঠাক করে গুছিয়ে ফিকু ওঁরাও ‘মাইল’ বলে হাঁক দিলেন। তা শুনেই দুলকি চালে পিঠে হলং পিলখানার দিকে এগোল জলদাপাড়ার ছোট্ট হাতিটি। ছমাস বয়স হলে কী হবে, এখন দ্বারকাপ্রসাদ সবেতেই যেন পাল্লা দিচ্ছে ‘বড়’দের সঙ্গে। গত জন্মাষ্টমীর দিন বাঁকুড়া থেকে জলদাপাড়ায় পৌঁছয় দলছুট হাতির বাচ্চাটি। পালক-মা চম্পাকলির দুধ খেয়ে বড় হতে থাকে। তারই নামকরণ হয় দ্বারকাপ্রসাদ। বন দফতর সূত্রের খবর, অন্য হাতির বাচ্চাগুলির তুলনায় বাঁকুড়ার এই শাবকটি একে বারে আলাদা। দুষ্টুমির পাশাপাশি সে মাহুতের কথা প্রতি পদে মেনে চলে। ডি এফ ও রাজেন্দ্র জাখর বলেন, “পালক মা তাকে এখনও দুধ খাওয়াচ্ছে। সে এখন ঘাস খেতে শুরু করেছে। হাতিটি হলং-এ খুব ভাল আছে। আচার-আচরণে সকলের নয়নের মণি হয়ে উঠেছে দ্বারকাপ্রসাদ।” দুই থেকে আড়াই বছর পর্যন্ত মায়ের কাছে হস্তিশাবককে রাখাই নিয়ম। মায়ের কাছে থাকায় সে সাধারণত মাহুতের কথা শুনতে চায় না। নির্ধারিত সময়ের পরে তাদের আলাদা করে রাখা শুরু হয়।
ছবি: রাজকুমার মোদক।
সন্তান কে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পর মাকে সামলাতে কদিন পায়ে শিকল বেঁধে রাখা হয়। ওই সময়ে মায়ের তেকে আলাদা হওয়া শাবককে দু-তিন দিন গান শুনিয়ে নানাভাবে শান্ত রাখার চেষ্টা করেন মাহুতরা। মোটামুটি ১৫ দিন পরে হাতির বাচ্চাটিকে কুনকি হিসেবে তৈরির প্রশিক্ষণ শুরু হয়। দ্বারকাপ্রসাদের ক্ষেত্রে তেমন কোনও ঝামেলা হয়নি। নানা সময়ে উদ্ধার হওয়া তিতি, তিস্তার তুলনায় দ্বারকাপ্রসাদের বুদ্ধি বেশি বলে মাহুতদের দাবি। মাসখানেক আগে পর্যন্ত অন্য হাতিরা নিজের খাবারের পাশাপাশি ছোট্ট হাতিটির খাবার পিঠে চাপিয়ে নিয়ে আসত। একদিন মাহুত ফিকু তাকে বনে নিয়ে যাওয়ার পথে ‘ধাত্’ বলতে সে দাঁড়িয়ে যায়। তার পরেই শুরু হয় ‘মাইল’, ‘ধাত্’, ‘তিরে’-এর মত নানা হাতিদের প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহাত শব্দ ব্যবহার। তবে মাহুতের গলাতেই তা শুনলে সে মানবে। জলদাপাড়ার পশু চিকিৎসক অশোক সিংহ বলেন, “দুই সপ্তাহ বয়সী মা ছাড়া হাতিটি নিয়ে আসা হয়েছিল। আজ সে পুরোপুরি সুস্থ রয়েছে দুধের পাশাপাশি বাইরের খাবার এখন খাচ্ছে সব দেখে ভাল লাগছে।” বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার চণ্ডীপুর গ্রামের কয়েকজন যুবক দ্বারকেশ্বর নদে ভেসে যাওয়ার সময়ে হাতিটিকে উদ্ধার করে বনকর্মীদের হাতে তুলে দেন। মানুষের হাতের ছোঁয়া পাওয়ায় বন দফতর তিন দফায় চেষ্টা করলেও হাতির পাল শাবকটিকে দলে ফিরিয়ে নেয়নি। তখনই তাকে জলদাপাড়ায় নিয়ে আসা হয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.