|
|
|
|
রাস্তা অবরোধ, ভাঙচুর চালাল পড়ুয়ারা |
ডানকুনির স্কুলে তাণ্ডব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ডানকুনি |
প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে অন্য এক শিক্ষকের বিরোধের জেরে শুক্রবার তুলকালাম কাণ্ড বাধে ডানকুনির মোনবেড় বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠে। ছাত্রছাত্রীরা প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে রাখে দীর্ঘ ক্ষণ। দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ করে তারা। প্রধান শিক্ষকের মোটর বাইক ভাঙচুর করা হয়। এক সময়ে ছাত্রছাত্রীদের ওই বিক্ষোভে সামিল হন অভিভাবকেরাও। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন স্কুলের বেশ কিছু ছাত্র সকাল ১১টা থেকে প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়কে ঘেরাও শুরু করে। এই ঘেরাও যখন চলছে তখনই ছাত্রদের একাংশ হাওড়া থেকে আরামবাগ যাওয়ার রাস্তা ওল্ড বেনারস রোড অবরোধ শুরু করে। ওই ঘটনার জেরে এ দিন স্কুলের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। পঠন-পাঠন লাটে ওঠে। ছাত্রদের ওই বিক্ষোভের কথা এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই তাদের সঙ্গে অভিভাবকেরা যোগ দেন। প্রাথমিক ভাবে ছাত্রেরা এক দফায় অবরোধ করেও তুলে নেয়। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরেই ফের আবারও রাস্তা অবরোধে সামিল হয় তারা। একই ভাবে পর পর তিন বার পথ অবরোধ করে ছাত্রেরা। শেষ পর্যন্ত দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ ছাত্রেরা অবরোধ তুলে নেয়। তীব্র যানজটে নাকাল হন সাধারণ মানুষ।
রাস্তা অবরোধ তুলে নিলেও ছাত্রেরা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত টানা প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে রাখে। পুলিশ মধ্যস্থতা করে ঘেরাও তোলার চেষ্টা করলেও ছাত্রেরা তাতে আমল দেয়নি। |
|
নিজস্ব চিত্র। |
ছাত্রদের টানা বিক্ষোভে এ দিন ওই স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড দেওয়ার কাজ বিলম্বিত হয়। শেষ পর্যন্ত ডানকুনি পুরসভার কাউন্সিলর পীযূষকান্তি পান স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মধ্যস্থতা করেন। এরপরই মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া শুরু হয়।
স্কুল সূত্রের খবর, ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সেখানকার অন্য এক শিক্ষক সুজয় সান্যালের দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছে। স্কুল পরিচালন কমিটি সেই বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করে প্রাথমিক ভাবে। কিন্তু তাতে কোনও ফল হয়নি। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। দুই শিক্ষকের মধ্যে বিরোধের ছায়া অবধারিত ভাবেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করে। ছাত্রছাত্রীদের একাংশ দুই শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে কার্যত দু’ভাগে ভাগ হয়ে যায়। ছাত্রদের মধ্যে বিভাজন হয়ে যাওয়ায় এ দিন ছাত্রদের একাংশের রোষ গিয়ে পড়ে প্রধান শিক্ষকের উপর। তার জেরেই স্কুলে বিক্ষোভ, রাস্তা অবরোধ পর্যন্ত ঘটনার মোড় নেয়।
ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেন, “স্কুলে নানা সমস্যা রয়েছে। ছাত্রদের বসার পর্যাপ্ত ঘর নেই। কিন্তু সেই সব সমস্যার সমাধানে আমরা যখন জেরবার তখন স্কুলের দুই শিক্ষকের বিরোধ এখন মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এর ফলে স্কুলে ছাত্রদের পড়াশোনার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি অবিলম্বে দুই শিক্ষককে বসিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ মিটিয়ে নিয়ে স্কুলের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে।” এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অবশ্য সংবাদ মাধ্যমের কাছে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অপর শিক্ষক সুজয়বাবু বলেন, “ছাত্রেরা বিক্ষোভ দেখালে আমার কী করার আছে?” |
|
|
|
|
|