এম আই-৫ রিপোর্টে প্রকাশ
এ বার জন্মস্থান বিতর্কে চার্লি চ্যাপলিন
তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছেন সারা বিশ্বের অগণিত দর্শক। তাঁর নিজস্ব বাচনভঙ্গি, অভিনয় জগতে এক নতুন ধারার জন্ম দিয়েছিল। এক সময়ে সংবাদ পত্রের শিরোনামে থাকা এই হলিউড অভিনেতা তাঁর মৃত্যুর ৩৪ বছর পরেও ফের এক বার শিরোনামে। তবে এ বার শিরোনামের বিষয় চার্লি চ্যাপলিনের নাগরিকত্ব নিয়ে ওঠা বিতর্ক। ১৮৮৯ সালের ১৬ এপ্রিল লন্ডনের দক্ষিণে ওয়ালওয়ার্থের ইস্ট স্ট্রিটে চ্যাপলিন জন্মেছিলেন বলে এত দিন জানা ছিল। কিন্তু ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা এম আই-৫-এর রিপোর্টে প্রকাশ, ওই অঞ্চলে, ওই নামে কারও জন্ম-নথি খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর এর ফলেই চ্যাপলিনের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চ্যাপলিনের বামপন্থী মনোভাব নিয়ে সন্দিহান আমেরিকার চাপে পড়ে এম আই-৫ চ্যাপলিন সম্পর্কে তদন্ত শুরু করেছিল। আর তখনই চ্যাপলিনের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন ওঠে।
এম আই-৫-এর প্রকাশিত ১১০ পাতার রিপোর্টে বলা হয়েছে, হয়তো জন্ম নথিতে চ্যাপলিন অন্য নামে নথিবদ্ধ রয়েছে। অথবা দক্ষিণ প্যারিসের ফন্টেনেব্লিউ অঞ্চলে তিনি জন্মেছিলেন বলে জানিয়েছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। চ্যাপলিনকে রাশিয়া থেকে পালিয়ে আসা ইহুদি উদ্বাস্তু হিসেবেও মনে করছেন অনেকে। তাঁর আসল নাম ইজরায়েল থর্নস্টেন বলে আমেরিকা যে দাবি করেছিল তা-ও লেখা রয়েছে ওই রিপোর্টে। তবে ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, চ্যাপলিনের বিরুদ্ধে তোলা আমেরিকার কোনও অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি। রাশিয়া বা ফ্রান্সের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ খুঁজে পায়নি এম আই-৫।
মাত্র তিন বছর বয়সেই বাবা মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল। ছোটবেলা কেটেছে চরম দারিদ্রের মধ্যে। কিন্তু রক্তে ছিল অভিনয়। স্বপ্ন সার্থক করতে ১৯১০ সালে চ্যাপলিন চলে যান আমেরিকায়। ১৯১৪ সালে প্রথম অভিনীত ছবি ‘মেকিং এ লিভিং’-এর মাধ্যমে হলিউডে তাঁর আবির্ভাব। এর পর একে একে ‘কিড অটো রেসেস অ্যাট ভেনিস’, ‘দ্য ট্র্যাম্প’, ‘দ্য কিড’, ‘দ্য গোল্ড রাশ’ প্রভৃতি সিনেমা চ্যাপলিনকে খ্যাতির চূড়ায় নিয়ে যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী যুগে কৌতুক চরিত্রে তাঁর অভিনয় পারদর্শিতা দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল। ১৯৪০ সালে নাৎসি জমানাকে ব্যঙ্গ করে তৈরি ‘দ্য গ্রেট ডিক্টেটর’-এ হিটলারের ভূমিকায় চ্যাপলিনের অভিনয় বিশ্ব জুড়ে বিতর্কের সৃষ্টি করে।
পরবর্তী কালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে আমেরিকার ঠান্ডা যুদ্ধ চলাকালীন চ্যাপলিনের বামপন্থী মনোভাব নিয়ে সন্দিগ্ধ হয়ে ওঠে আমেরিকা। ১৯২৩ সালে মার্কিন কমিউনিস্ট পার্টিকে আর্থিক অনুদান দেওয়ায় আমেরিকার সন্দেহ আরও জোরদার হয়ে ওঠে। কিন্তু চ্যাপলিন নিজে কখনও তাঁর বাম-যোগ স্বীকার করেননি। ১৯৫২ সালে ‘লাইমলাইট’ সিনেমার প্রিমিয়ারে লন্ডনে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে ফেরার সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে যোগ রেখে চলার অভিযোগ তুলে চ্যাপলিনকে আমেরিকায় প্রবেশের অনুমতি দেয়নি মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল জেমস ম্যাকগ্রেনারি। আর তখনই চ্যাপলিনের বিরুদ্ধে এম আই-৫-কে তদন্তের অনুরোধ জানায় আমেরিকা। সেই তদন্তের রিপোর্টই ব্রিটেনের জাতীয় মহাফেজখানা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে।
তবে এই বিতর্ককে গুরুত্ব দিতে রাজি নন প্রাক্তন এম আই-৫ প্রধান জন ম্যারিয়ট। তিনি বলেন, “চ্যাপলিন হয়তো বামপন্থী ছিলেন। কিন্তু তাঁর উপস্থিতি কোনও দেশের পক্ষেই বিপজ্জনক ছিল না।” বিতর্ক যাই থাকুক চ্যাপলিনের নাগরিকত্ব নিয়ে ওঠা বিতর্ক সে সময়ে আমেরিকা সরকারের বাম বিদ্বেষ ফের এক বার প্রকাশ্যে এনে দিয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.