অঘটনই নিত্য ঘটনা মুচিপাড়ায়
অহরহ লেন ভাঙার খেলাই ডাকে বিপদ
ভিড়িঙ্গি মোড় হতে পারে। অথবা ডিভিসি মোড়। আবার মুচিপাড়া মোড়ও হতে পারে।
সকাল ৭টা হতে পারে। অথবা দুপুর ২টো। হতে পারে রাত ৮টাও।
জাতীয় সড়কে ট্রাফিক আইন ভাঙার খেলা চলছেই। যার জেরে লেগেই রয়েছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। অনেক সময়ে আবার জীবন দিয়েও মূল্য চোকাতে হয় কাউকে কাউকে। শুক্রবার যেমন হল গঙ্গারাম কর্মকারের ক্ষেত্রে। ট্রাফিক আইন ভেঙে ভুল লেন ধরে মোটর সাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময়ে রানিগঞ্জের বিধায়ক সোহরাব আলির গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ দিতে হল তাঁকে। এর পরেও অবশ্য শনিবার লেন ভাঙার দৃশ্য দেখা যাবে না, এ কথা হলফ করে বলতে পারছেন না জাতীয় সড়কে ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্বে থাকা পুলিশ বা সিভিক পুলিশকর্মীরা। একই বক্তব্য অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার দুর্গাপুর শাখার অন্যতম কর্মকর্তা সমীর রায়েরও।
উল্টো পথে। দুর্গাপুরে বাঁশকোপা এলাকায় ২ নম্বর জাতীয় সড়কে বিকাশ মশানের তোলা ছবি।
বর্তমানে তাঁদের সংস্থা পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। সমীরবাবু বলেন, “বছরের পর বছর ধরে পথ নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতা কর্মসূচি চালিয়ে আসছি। তা সত্ত্বেও এমন দুর্ঘটনার খবর শুনলে খুব খারাপ লাগে।”
জাতীয় সড়কে সিগন্যাল ব্যবস্থা মাঝে-মধ্যেই গণ্ডগোল থাকে। তাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়। কিন্তু যে সমস্ত সিগন্যালে নিমমাফিক আলো জ্বলে, দুর্ঘটনা ঘটে সেখানেও। কারণ একটাই, ট্রাফিক আইন না মানা। গাঁধী মোড়, ডিভিসি মোড় বা মুচিপাড়া, সর্বত্রই এক দৃশ্য। মুচিপাড়ার পরিস্থিতি আর একটু জটিল। এই মোড় থেকে এক দিকে গিয়েছে স্টেশন রোড। একটু এগিয়ে কাঁকসার বামুনাড়ার দিকে গিয়েছে আরও একটি রাস্তা। বিভিন্ন দিক থেকে আসা মানুষজন মুচিপাড়া মোড়ে জড়ো হন বাস, অটো ধরতে। পাশেই বাজার। সে জন্য মানুষের যাতায়াতও বেশি। সিগন্যালে লাল আলো জ্বলার পরেও অনেককে দৌড়ে রাস্তা পেরোতে দেখা যায়। কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা জানান, সামান্য সময় বাঁচাতে সিগন্যাল অগ্রাহ্য করেই রাস্তা পারাপার করেন অনেকে। সবাইকে আটকানো যায় না।
শুক্রবারের দুর্ঘটনাটিও ট্রাফিক আইন ভাঙার ফল। বিধায়ক সোহরাব আলি জানান, গঙ্গারামবাবু ট্রাফিক আইন না মেনে ভুল লেনে বাইক নিয়ে জাতীয় সড়কে উঠছিলেন। আচমকা সেটি সামনে চলে আসায় তাঁর গাড়ির চালক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। সরাসরি ধাক্কা মারেন গঙ্গারামবাবুর মোটর সাইকেলে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। ওসি ট্রাফিক (মুচিপাড়া) আর এন সাঁতরা বলেন, “ট্রাফিক আইন ভাঙার জন্যই বহু দুর্ঘটনা ঘটে। মানুষকে সচেতন করতে ধারাবাহিক ভাবে সচেতনতা শিবির করা হচ্ছে।”
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের শেষ পর্যন্ত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রিত হত থানা থেকে। ট্রাফিক পুলিশের স্বতন্ত্র কোনও পরিকাঠামো ছিল না। নতুন বছরের শুরুতে এই এলাকায় পৃথক ট্রাফিক পরিকাঠামো গড়া হয়। সম্প্রতি কমিশনারেট এলাকায় এক হাজার ‘সিভিক পুলিশ’ নিয়োগ করা হয়েছে। তার মধ্যে সাড়ে চারশো জন শুধু ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁদের সহযোগিতার জন্য রয়েছেন একশো কনস্টেবল। পুরো কমিশনারেট এলাকা ৮টি ভাগে ভাগ করে প্রতিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এক এক জন ওসিকে। সঙ্গে থাকছেন দু’জন করে এএসআই। সবার উপরে রয়েছেন ডিসি (ট্রাফিক)। পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ বলেন, “শুধু জরিমানা করে ফল হবে না। ট্রাফিক বিধি মানা কতটা জরুরি, তা বোঝাতে লাগাতার কর্মসূচি চলছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.