|
|
|
|
নাতির হাতে নিহত ঠাকুমা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
নেশা করার জন্য ঠাকুমা টাকা দিতে রাজি না-হওয়ায় মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে খুনের অভিযোগ উঠল নাতির বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে কোচবিহার শহরের রেল স্টেশন লাগোয়া রেল কোয়ার্টারে ওই ঘটনা ঘটে। পুলিশ ওই যুবক রামকৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম সুরবালা দাস (৮৮)। তাঁর নাকে, মুখে রক্তের দাগ ছাড়াও শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। রাতে রেল কোয়ার্টারে ওই যুবক এবং সুরবালা দেবীই ছিলেন। রামকৃষ্ণ বেশ কিছুদিন ধরে ওই যুবক ট্যাবলেট, কাশির সিরাপ, বিভিন্ন আঠার মতো নেশার সামগ্রীতে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। কোনও কাজকর্মও করতেন না। নাতিই যে খুনের ঘটনায় জড়িত এই ব্যাপারে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন বৃদ্ধার ছেলে এবং ধৃত যুবকের বাবা জ্যোতিষ দাস। পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। পরিবারের লোকেদের অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতার নাতিকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সন্দেহভাজন নেশাসক্ত যুবক। অন্য কেউ ঘটনার সময় কোয়ার্টারে ছিলেন না। নেশার জন্য টাকা চেয়ে না পাওয়ায় না কি, অন্য কোন কারণে সে এমন কাণ্ড করেছে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে কী করে খুনের ঘটনাটি হয়েছে তা নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে।” যে ভারী বস্তু দিয়ে বৃদ্ধাকে আঘাত করা হয় সেটির এখনও হদিশ করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারের ওই রেল কোয়ার্টারেই স্ত্রী শ্যামলী দাস, ছেলে রামকৃষ্ণ ও বৃদ্ধা মা সুরবালা দেবীকে নিয়ে থাকতেন জ্যোতিষবাবু। বুধবার বিকেলে মা সুরবালা দেবী ও ছেলে রামকৃষ্ণকে বাড়িতে রেখে তিনি স্ত্রী এবং অন্য কয়েকজন আত্মীয়কে নিয়ে দিনহাটায় ছেলের জন্যই পাত্রী দেখতে গিয়েছিলেন। রাতে রামকৃষ্ণের বিয়ের জন্য পাত্রী দেখে দিনহাটা থেকে ফেরেন। সেই সময়ে এলাকার অন্য সব কোয়ার্টারে আলো থাকলেও তাঁদের ঘরের সব আলো নেভানো দেখে জ্যোতিষবাবুর সন্দেহ হয়। ডাকাডাকি করে ঘরে ঢুকে আলো জ্বালতেই জ্যোতিষবাবু দেখেন তাঁর মায়ের দেহ মেঝেয় পড়ে রয়েছে। চারদিকে রক্তের দাগ। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে তাঁরা চিৎকার শুরু করার পরে পাশের ঘর থেকে রামকৃষ্ণ ছুটে আসেন। জ্যোতিষবাবু বলেন, “কিছু দিন থেকে আমার ছেলে নানারকম নেশায় জড়িয়ে পড়েছিল। বিয়ে দিয়ে সংসারী করানো গেলে পরিস্থিতি বদলাবে ভেবেছিলাম। সেই জন্য ওর পাত্রী দেখতে দিনহাটা যাই। মাকে দেখভালের জন্য ছেলেকে থাকতে বলি। রাতে ফিরে দেখি মার রক্তাক্ত দেহ মেঝেয় পড়ে আছে।” তাঁর অভিযোগ, “বাড়িতে ছেলে ছাড়া অন্য কেউ ছিল না। তা ছাড়া ঘটনার পরে ছেলে চিৎকার করে বলেছিল আমার কাজ শেষ, এবার তোমাদের যা করার কর। তারপরে নিজেই গোটা ঘটনা জানিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি। একে ওই সময় বাড়িতে অন্য কেউ ছিল না, অন্যদিকে নেশার জেরে মানসিক অসুস্থতা থেকে ছেলে ওই কান্ড ঘটিয়েছে বলে সন্দেহ।” |
|
|
|
|
|