উত্তেজনা গঙ্গারামপুরেও
বালুরঘাটে অধ্যক্ষকে হুমকি, ভাঙচুর, অভিযুক্ত এসএফআই
লেজ ভোটে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার ছাত্র বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে উঠল দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর। এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে বালুরঘাট কলেজের অধ্যক্ষকে হুমকি ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি, গঙ্গারামপুরে সিপিএম পার্টি অফিসে তাঁদের দুই প্রার্থীকে আটকে রাখার অভিযোগ তুলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একদল সমর্থক সেখানে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। হামলা চলে এসএফআই অফিসেও। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগ বলেন, “গঙ্গারামপুরের ঘটনায় দু’পক্ষের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে।” ওই দু’টি কলেজেই গত বছর বাম ছাত্র সংগঠন জয়ী হয়েছিল। হরিরামপুর কলেজেও এ দিন মনোনয়ন প্রত্যাহার নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়।
গঙ্গারামপুরের সিপিএম নেতা নারায়ণ বিশ্বাসের অভিযোগ, “আলোচনার নামে টিএমসিপি দল বেঁধে পার্টি অফিসে হামলা করে। গায়ের জোরে ওরা কলেজে ছাত্র সংসদ দখল করতে চাইছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের পাল্টা অভিযোগ, “পুরনো কায়দায় প্রার্থীদের আটকে, ভয় দেখিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারের চেষ্টা করেছিল ওরা। পার্টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
বালুরঘাট কলেজে অধ্যক্ষকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ছাত্ররা।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর-সহ জেলার পাঁচটি কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন। এ দিন বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর কলেজে ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। বেলা ১১টা নাগাদ বালুরঘাট কলেজের অধ্যক্ষের ঘরে এসএফআইয়ের প্রার্থী তথা বিএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র দেবাঞ্জন সর্বাধিকারীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের কাজ চলছিল। সেই সময়ে টিএমসিপির ছাত্রেরা অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়। কলেজে উপস্থিত পুলিশ কর্মীরা দু’পক্ষকে বের করে দেয়। অধ্যক্ষ বিনয় রবিদাসের অভিযোগ, “এর পরেই একদল ছাত্র আমার ঘরে ঢুকে টিএমসিপির দালাল বলে হুমকি দেয় এবং গালিগালাজ করে। টেবিলের কাচ ভেঙে চুরমার করে।” এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষকে নিগ্রহ ও অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে টিএমসিপি কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখায়।
অধ্যক্ষ অবশ্য পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। তাঁর যুক্তি, “সকলেই আমার ছাত্র। কার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাব? তা ছাড়া সমস্ত ঘটনা পুলিশের সামনেই ঘটেছে।” জেলার পুলিশ সুপার জানান, অধ্যক্ষ অভিযোগ না-জানালে তাঁরা নিজেদের উদ্যোগে কোনও আইনি ব্যবস্থা নিতে চান না।
এসএফআইয়ের বালুরঘাট শহর লোকাল সম্পাদক পার্থ রায় অধ্যক্ষের ঘরে ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “টিএমসিপির ছেলেরা অধ্যক্ষের ঘরেই পুলিশের সামনে আমাদের ধাক্কা দিয়ে বের দেয়। অধ্যক্ষের কাছে এর প্রতিবাদ জানানো হয়। হুমকি ও ভাঙচুরের অভিযোগ মিথ্যা।” টিএমসিপির কলেজ ইউনিট সভাপতি গৌতম ঘোষ বলেন, “পরিচয়পত্র ছাড়া কোনও প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করছেন কি না, সেটা দেখতে গেলে ওরা মারমুখী হয়ে ওঠে। এর পর বহিরাগতদের নিয়ে গিয়ে এসএফআই কর্মীরা অধ্যক্ষের ঘরে হামলা চালায়।”
গঙ্গারামপুরে এসএফআই-এর কার্যালয়ে ভাঙচুর।
এ দিন দুপুর সওয়া একটা নাগাদ টিএমসিপির দুই প্রার্থীকে ধরে সিপিএম পার্টি অফিসে আটকে রাখা হয়েছে বলে চাউর হয়ে গেলে গঙ্গারামপুর কলেজে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। টিএমসিপির জেলা সভাপতি অতনু রায়ের অভিযোগ, প্রথম বর্ষের ছাত্র নিরঞ্জন পাল ও সুমিত দাস এবং ছাত্র সংগঠনের সদস্য বাবু সাহাকে সিপিএম পার্টি অফিসে ধরে নিয়ে যায় এসএফআই কর্মীরা। সে সময় শহর সভাপতি রানা ঘোষকেও তাড়া করা হয়। অতনুবাবুর দাবি, “তখনই থানায় খবর দেওয়া হয়। বাকি ছাত্রেরা গিয়ে আটকে রাখা প্রার্থী ও সদস্যকে উদ্ধার করে আনে। পার্টি অফিসে ভাঙচুর করা হয়নি।” গঙ্গারামপুর সিপিএম পার্টি অফিসে বসে সিটুর জেলা সম্পাদক সুষেণ সরকারের পাল্টা অভিযোগ, “কাউকে পার্টি অফিসে আটকে রাখা হয়নি। ওরা এসে হামলা চালিয়ে পার্টি অফিস ভাঙচুর করে।”

বৃহস্পতিবার অমিত মোহান্ত’র তোলা ছবি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.