|
|
|
|
ঠিকা-কর্মী ছাঁটাই, বিক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ি |
এ বার উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার জলপাইগুড়ি এবং ময়নাগুড়ি ডিপোয় নিরাপত্তার কাজে যুক্ত ঠিকা শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ে নির্দেশ দেওয়া হল। বৃহস্পতিবার ময়নাগুড়ি ডিপোয় ঠিকা চুক্তিতে থাকা ৭ জন নিরাপত্তা কর্মী এ দিন কাজে যোগ দিতে গেলে ডিপো কর্তৃপক্ষ তাদের বরখাস্তের নোটিশ দেখিয়ে ফিরে যেতে বলেন। এর পরেই ঠিকা কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। দিনভর ডিপোয় বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বুধবার রাতে সংস্থার সদর দফতর থেকে নির্দেশ পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় নিরাপত্তার কাজে যুক্ত জলপাইগুড়ি ডিপোর ১০ জন ঠিকা শ্রমিককে বৃহস্পতিবার থেকে ছাঁটাই করা হচ্ছে। ওই নির্দেশ পেয়ে লাগাতার আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন ছাঁটাই কর্মীরা। জলপাইগুড়ি ডিপোর ওই কর্মীরা সকলেই ১৫ বছরেরও বেশি কর্মরত ছিলেন বলে দাবি করেছেন। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো জলপাইগুড়ি ডিপোর নিরাপত্তাকর্মীদের ঘরে এদিন তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিবাদে এদিন ডিপো-ইন-চার্জকে সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দিয়ে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। আজ, শুক্রবার থেকে জলপাইগুড়ি ডিপোয় অনির্দিষ্টকাল রিলে অনশন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটু প্রভাবিত ঠিকা শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা। ঠিকা শ্রমিক ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার প্রশ্ন নেই বলেই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। সংস্থার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এনবিএসটিসিকে বাঁচাতে হবে। এটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। ঠিকা শ্রমিকদের তো ডিপোতে আন্দোলন করার অধিকারই নেই। |
|
এনবিএসটিসি শিলিগুড়ি ডিপোর সামনে ছাঁটাই ঠিকাকর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
তাঁরা সকলেই নির্দিষ্ট এজেন্সির মাধমে কাজে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। এনবিএসটিসি তাদের কোনও নিয়োগপত্র দেয়নি। এজেন্সির মাধ্যমেই তাদের বেতন হত। ক্ষোভ থাকলে তারা এজেন্সিকে বলুক।” চেয়ারম্যানের দাবি, সিপিএম রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির জন্যই ঠিকা শ্রমিকদের দিয়ে আন্দোলন করছে। চৌত্রিশ বছর ধরে বামেরা সরকার ছিল। তারা তখন কেন ওই শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেয়নি বলে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। অন্য দিকে প্রতিবাদে অনড় থাকার কথা জানিয়েছে. উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন ঠিকা শ্রমিক ইউনিয়নের জলপাইগুড়ি ডিপোর নেতৃত্ব। তাদের তরফে অনুপ সেনগুপ্ত বলেন, “এতো তুঘলকী সিদ্ধান্ত। ঠিকা শ্রমিকরা কেউ ১০ কেউ ২০ বছর ধরে কাজ করছেন। আচমকা কয়েক ঘন্টার নোটিশে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এটা অমানবিক। শ্রমিকরা কী ভাবে দিন গুজরান করবেন? আমরা এই সিদ্ধান্ত মানব না। শুক্রবার থেকে অনশনে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” ময়নাগুড়ি ডিপোর কর্মীদের অভিযোগ, হিরণ রায়, শরৎ রায়, তাজ আলিদের মতো ৫ জন ২০ বছর ধরে কাজ করতেন। ২ জন ৩ বছর ধরে কর্মরত। হিরণবাবু বলেন, “ভাবতে পারছি না-ময়নাগুড়ি ডিপোয় আমাদের মতো কর্মীদেরও কাজ হারাতে হল। পরিবার কী ভাবে চলবে ভেবে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।” সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২০ টাকা মজুরি ভিত্তিতে তারা কাজ করতেন। ময়নাগুড়ি ডিপোয় আরও ১৪ জন ঠিকা কর্মী রয়েছেন। এনবিএসটিসি’র জলপাইগুড়ি ডিপোয় ঠিকা শ্রমিক ছিলেন ১৬ জন। তার মধ্যে ১০ জন নিরাপত্তা কর্মী। বাকিরা শ্রমিক। এর আগে কোচবিহার-সহ অনান্য ডিপোতে ঠিকা শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হলেও এ দিনই প্রথম জলপাইগুড়ি এবং ময়নাগুড়িতে ছাঁটাইয়ের নির্দেশ আসে। |
|
|
|
|
|