খানাখন্দে ভরা রাস্তার মেরামতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয় মানুষ। কিন্তু প্রশাসনের টনক নড়েনি। প্রতি মুহূর্তেই দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ভুগতেন নিত্যযাত্রীরা। বৃহস্পকতিবার সেই রাস্তাতেই গর্তে পড়ে উল্টে গেল যাত্রীবোঝাই বাস। ৬ জন মহিলা-সহ আহতের সংখ্যা ২০ জন। তাঁদের মধ্যে ৫ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা পথ অবরোধ করলে অবশেষে মিলল প্রশাসনে রাস্তা সারানোর আশ্বাস। বৃহস্পতিবার দুপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার কাটিয়াহাটের কাছে গন্ধর্বপুরে সংগ্রামপুর-তেঁতুলিয়া রোডে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ ব্যান্ডেল-হাসনাবাদ রুটের একটি বাস বসিরহাটের দিকে আসছিল। গন্ধর্বপুরের কাছে রাস্তায় গর্তে পড়ে গেলে বাসচালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। বাসটি রাস্তার ধারে কাদারবিলে উল্টে যায়। বাশে সেই সময় ৪০-৪৫ জন যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা এসে উদ্ধার কাজে হাত লাগান। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে আহতদের চিকিৎসা করানো হলেও ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। |
উল্টে যাওয়া বাসটি।-নিজস্ব চিত্র |
আহতদের চিকিৎসার পরেই স্থানীয় মানুষ রাস্তার সংস্কারের দাবিতে পথ অবরোধ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, বার বার প্রসাসনের বিভিন্ন মহলে দাবি জানানো হয়েছে রাস্তা সংস্কারের জন্য। কিন্তু কেউই কান দেননি। যার ফলে আজকের এই দুর্ঘটনা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে রাস্তা মেরাতমি প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
বসিরহাটের সংগ্রামপুর থেকে তেঁতুলিয়া হয়ে স্বরূপনগর বিডিও অফিস পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার রাস্তা অত্যন্ত বেহাল। বেশিরভাগ জায়গায় পিচ-পাথর উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। আলগা হয়ে যাওয়া পাথর গাড়ির চাকায় লেগে ছিটকে রাস্তার পাশের দোকানের কাচ ভাঙছে। আহত হচ্ছেন পথচারীরা। বিশেষ করে কাটিয়াহাট, আটুরিয়া-সহ কয়েকটি এলাকায় রাস্তার অবস্থা খুবই শোচনীয়। বড় ধরনের যানবাহন তো দূরঅস্ত, সাধারণ মোটরসাইকেল, সাইকেল চালানোও দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ দিন বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে শুয়ে আহত যাত্রীদের একজন হাসানু মণ্ডল বলেন, “বাসের সামনে বসেছিলাম। অসমান রাস্তায় চলতে চলতে বাসটা মাঝেমধ্যেই ভীষণভাবে দু’দিকে হেলে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল এই বুঝি উল্টে গেল। কাদারবিল এলাকায় রাস্তার মধ্যে একটা উঁচু ঢিবিতে বাসের চাকা উঠতেই তা ধসে যায়। চাকা গিয়ে পড়ে ডোবার মতো একটা গর্তে। চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে বাস রাস্তার পাশে উল্টে যায়।”
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বারাসত ও বসিরহাট ডিভিশনের আধিকারিকেরা রাস্তাটি পরিদর্শন করেছেন। আপাতত খানাখন্দগুলি ভাল করে তাপ্পি দিয়ে মেরামত করে দেওয়া হবে। এ জন্য ১৩ লক্ষ টাকার পরিকল্পনা করা হয়েছে। দ্রুত যাতে কাজ শুরু করা যায় তার চেষ্টা চলছে।” |