সংশোধনাগারে মাধ্যমিকের জন্য তৈরি হচ্ছেন ২১ বন্দি
হরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে ২১ জন মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবেন। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে ওই পরীক্ষা। শেষ ৭ মার্চ। ২০১১ সালে বহরমপুরের এই সংশোধনাগার থেকে মাধ্যমিক দিয়েছিলেন ১৮ জন। গত বারের তুলনায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এ বছর তিন জন বেড়েছে। জেল সুপার সুদীপ্ত চক্রবর্তী বলেন, “২১ জন পরীক্ষার্থীর সকলেই সাজাপ্রাপ্ত বন্দি। তার মধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ১০ জন। কিন্তু কোনও মহিলা পরীক্ষার্থী নেই। এদের সকলেরই মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড চলে এসেছে।” ফলে শেষ মুহূর্তের পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে সংশোধনাগার জুড়ে।
মাধ্যমিকের প্রস্তুতি সংশোধনাগারে। নিজস্ব চিত্র।
এর আগে ২০১১ সালে রাজ্যের বিভিন্ন জেলে বন্দি ৫৬ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তার মধ্যে ১৮ জন ছিল বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের। তাঁরা সকলেই প্রথম বিভাগে পাশ করেন। চন্দনা রায় মেয়েদের বিভাগে ৬৮.৪% নম্বর এবং ছেলেদের বিভাগে উত্তম দাশ ৬৮.২% নম্বর পান, যা রাজ্যের বিভিন্ন জেলের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ। তাঁরা দু’জনেই এখন কলা বিভাগের একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রী। সুদীপ্তবাবু বলেন, “জেলা ডন বস্কো স্কুল কর্তৃপক্ষের পরিচালনায় সংশোধনাগারের মধ্যে ‘বিদ্যার্থী ভবন’ নামে একটি মাধ্যমিক স্কুল চলে।” প্রতি দিন সকালে ৮টা থেকে স্কুল শুরু হয়। ক্লাস শেষ হতে বেলা সাড়ে ১১টা বেজে যায়। কিন্তু তার পরেও কোনও পরীক্ষার্থী যদি মনে করেন পড়াশোনা করব, সেক্ষেত্রে জেল কর্তৃপক্ষ দুপুর ২টো পর্যন্ত ছাড় দিয়ে রেখেছে। সুদীপ্তবাবু বলেন, “সারা রাত ওয়ার্ডের আলো জ্বলে। ফলে কোনও কোনও পরীক্ষার্থী অনেক রাত পর্যন্ত জেগেও পড়াশোনা করেন। কেউ তাঁদের বিরক্ত করে না।” ওই পরীক্ষার্থীদের যাবতীয় বই-খাতা-পেন সরবরাহ করা হয়ে থাকে প্রিজর্নাস ওয়েলফেয়ার ফান্ড থেকে। বন্দিদের দৈনিক ভাতাও মেলে। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিতে ওই ২১ জনের প্রায় সারা দিন কেটে যায়। যেমন সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের মধ্যে আবু তালেব শেখ ও মহারাজ প্রামাণিক অফিসের বিভিন্ন কাজ করে থাকেন, তেমনি জেলের ‘ব্যান্ড’ দলের অন্যতম সদস্য রয়েছেন বিজেন চৌধুরী। কিন্তু পড়াশোনার চাপে তাঁদের এখন বই থেকে মুখ তোলার সময় কোথায়? সুদীপ্তবাবু বলেন, “ওই ২১ জনের পাওনা দৈনিক ভাতা পরীক্ষার্থী হিসেবে দেওয়া হয়। তবে জেলের মধ্যে বিভিন্ন কাজ করতে সকলেই ভালবাসেন। স্কুল শেষে তাঁরা সকাল সাড়ে ১১টার পরে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন।”
ডন বস্কোর ৯ জন শিক্ষক ওই বন্দিদের পড়ান। সেই সঙ্গে সংশোধনাগারের ডেপুটি জেলার চন্দ্রনাথ বিশ্বাস ইংরেজি এবং সংশোধনাগারের বিচারাধীন বন্দি বৈকুণ্ঠ নন্দী নিয়মিত অঙ্কের ক্লাস নেন। বাংলা পড়াতেন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি মোহিত বিশ্বাস। সুদীপ্তবাবু বলেন, “চন্দ্রনাথ বিশ্বাস পড়াতে ভীষণ ভালবাসেন। আর জটিল যে কোনও অঙ্ক নিমেষে সমাধানের জন্য রয়েছেন বৈকুণ্ঠ। তিনি একটি মাধ্যমিক স্কুলের অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.