দালাল-চক্রে সরাসরি মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠল হুগলির আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক (আরটিও) তাপস সরকারের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার চুঁচুড়া থানায় এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্বয়ং অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) আর অ্যালিয়াস ভেজ।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাপসবাবু। তিনি বলেন, “অফিসের মধ্যে যাতে বাইরের লোক না আসে, তার জন্য আমি একাধিকবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার পক্ষে তো পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। বাইরের লোকজন জোর করে ভিতরে ঢুকে পড়ে। অন্যের দোষের ভাগী হলাম।” পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
নজিরবিহীন ভাবে আরটিও-র বিরুদ্ধে এ ভাবে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা থানায় অভিযোগ দায়ের করায় হুগলিতে প্রশাসনিক মহলে সাড়া পড়ে গিয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) তাঁর অভিযোগ দায়ের করার কথা অস্বীকার করেননি। তবে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন বলেন,“আরটিও-র বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে পুলিশের কাছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখনই এর বেশি কিছু বলা যাবে না।”
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, চুঁচুড়ায় আরটিও অফিসে দীর্ঘদিন ধরেই দালাল-চক্রের রমরমার অভিযোগ উঠছিল। সাধারণ মানুষ গাড়ির ‘রেজিস্ট্রেশন’ বা অন্য কাজে গিয়ে দালালদের হাতে নানা ভাবে প্রতারিত হচ্ছিলেন এবং দালালদের না ধরলে কাজ হয় না, এমন অভিযোগও উঠছিল।
গত সেপ্টেম্বরে জেলাশাসক আরটিও-কে বিকেল চারটে পর্যন্ত সরাসরি গাড়ি-মালিকদের পরিষেবা দেওয়ার কাজ করার নির্দেশ দেন। এর পরে অফিস সংক্রান্ত অন্যান্য কাজ ভিতরে করার কথা ছিল। কারণ অভিযোগ আসছিল, অফিসের নির্দিষ্ট সময়ের পর ওই অফিসে নানা ‘অনৈতিক’ উপায়ে কাজ হয়। কিন্তু জেলাশাসকের নির্দেশ মানা হচ্ছিল না বলে অভিযোগ।
বুধবার বিকেলে অফিসের নির্দিষ্ট সময়ের পর অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) নিজেই পুলিশ নিয়ে হানা দেন ওই অফিসে। তল্লাশি চালিয়ে সেখান থেকে চার দালালকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। এরপরই প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। প্রশাসনিক মহলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আরটিও-র বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হবে। তাপসবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি জেলাশাসকের নির্দেশ মতোই অফিস চালাতেন। |