কোনও কারণে বিদ্যুৎ চলে গেলে অন্তত মহাকরণকে আর বেশি ক্ষণ অন্ধকারে থাকতে হবে না। রাজ্যের প্রশাসনিক সদরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য নতুন স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু করেছে সিইএসসি। মহাকরণে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট হলে মুহূর্তের মধ্যে বিকল্প পথে বিদ্যুৎ পাঠিয়ে পরিস্থিতি সামলে দেবে ওই স্বয়ংক্রিয় পরিকাঠামো।
নতুন পরিকাঠামোয় বিকল্প পথে দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে কী ভাবে?
সিইএসসি জানাচ্ছে, মহাকরণে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে নতুন এই স্বয়ংক্রিয় পরিকাঠামো নিজের থেকেই সিইএসসি-র কন্ট্রোল রুমে সিগন্যাল দিতে শুরু করবে। সিগন্যাল পেলে কন্ট্রোল রুমে বসেই ইঞ্জিনিয়ারেরা একটি সুইচ টিপে বিকল্প লাইনের মাধ্যমে সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে ওই ভবনে। কলকাতায় এই প্রথম কোনও বাড়িতে ‘অটোমেটেড পাওয়ার’ নামে এই স্বয়ংক্রিয় পরিষেবা চালু করা হল বলে সিইএসসি-কর্তাদের দাবি।
কী ভাবে গড়া হল এই ব্যবস্থা?
সিইএসসি-কর্তারা জানান, এটা খুবই আধুনিক প্রযুক্তি। মহাকরণের সঙ্গে সিইএসসি-র মূল কন্ট্রোল রুমের মধ্যে ‘অপটিক্যাল ফাইবার কেব্ল’ বসিয়ে দ্রুত একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মহাকরণে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিকল্প আরও একটি কেব্ল লাইনও বসেছে। পুরো পরিকাঠামোটি এমন ভাবে গড়ে তোলা হয়েছে, যাতে কন্ট্রোল রুমে বসে যে-কেউ মহাকরণের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের পরে সিইএসসি-র দফতরে খবর দেওয়া, সেখান থেকে ইঞ্জিনিয়ার পাঠানো, বিভ্রাটের কারণ সন্ধান, তার পরে বিদ্যুৎ ফেরানো এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় চলে যায়। নতুন ব্যবস্থায় সেটা হবে না। প্রায় পলকের মধ্যেই ফের বিদ্যুৎ পেয়ে যাবে মহাকরণ। সিইএসসি-র এক কর্তা জানান, চলতি সপ্তাহ থেকেই এই পরিষেবা চালু হয়ে গিয়েছে। এবং এই স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মহড়ায় দেখা গিয়েছে, ১০-১২ সেকেন্ডের মধ্যে মহাকরণে বিদ্যুৎ ফিরিয়ে দেওয়া যাচ্ছে। কিছু দিন আগে পর্যন্ত কোনও কারণে মহাকরণে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে ফের সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক করার জন্য সিইএসসি-র ইঞ্জিনিয়ারদের সেখানে ছুটে যেতে হত। তাতে নষ্ট হত অনেকটা সময়। পূর্ত দফতর ওই সব সময়ে সিইএসসি-র বিকল্প সরবরাহ লাইন থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে পরিস্থিতির সামাল দিত ঠিকই। তবে নতুন সরকারের যুক্তি, রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক ভবনের এই ব্যবস্থাটি মোটেই আধুনিক নয়। তাই এই নতুন ব্যবস্থা। |