বহরমপুর নিউ জেনারেল হাসপাতালের মধ্যে বিশ্রামাগারে প্রায় চার ঘন্টা পড়ে থাকল অজ্ঞাতপরিচয় এক বৃদ্ধার মৃতদেহ। অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়সারা মনোভাবের কারণেই ওই বৃদ্ধার মৃতদেহ বিশ্রামাগারে দীর্ঘ ক্ষণ পড়ে থাকে। মৃতদেহটি ঢাকা পর্যন্ত দেওয়া ছিল না। ট্যাক্সি ইউনিয়নের সদস্যরা চাঁদা তুলে মৃতদেহ সৎকার করতে উদ্যোগী হলে হাসপাতাল কতৃর্পক্ষের টনক নড়ে। নিউ জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তথা জেলা হাসপাতালের ডেপুটি সুপার আনন্দ মণ্ডল বলেন, “ওই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায়ী নয়। কেননা, সকাল ১০টা নাগাদ বিষয়টি জানতে পেরে হাসপাতালের কর্মীরা গিয়ে ওই বৃদ্ধার মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসে। চিকিৎসক তখন সরজমিনে খতিয়ে দেখে ‘মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে’ বলে লিখে দেওয়ার পরেই বহরমপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে মৃতদেহ নিয়ে যায়।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস দু’য়েক আগে ওই বৃদ্ধা বহরমপুর হাসপাতালের ওই বিশ্রামাগারে ‘আশ্রয়’ নেন। সারা দিন ভিক্ষা করে যা হত, তাই দিয়ে খাওয়া-দাওয়া করতেন। হাসপাতাল চত্বরে থাকা বিভিন্ন দোকান মালিক তাঁকে খাবার কিনে খাওয়াতেন। চায়ের দোকান মালিক ভরত দে বলেন, “বিশ্রামাগারে ওই বৃদ্ধা শুয়ে থাকতেন। সকালে শুনি ওই বৃদ্ধা মারা গিয়েছে। এর পরে দীর্ঘ ক্ষণ বিশ্রামাগারের মধ্যেই মৃতদেহ পড়ে থাকে।” নিউ জেনারেল হাসপাতালের ওই বিশ্রামাগারের মধ্যে দুজন বৃদ্ধা থাকতেন। তার মধ্যে এক জন ডোমকলের সুহাসিনী মণ্ডল। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে তাঁর আস্তানা হয় ওই বিশ্রামাগার। অশীতিপর সুহাসিনীদেবী বলেন, “ওই বৃদ্ধাকে মাসি বলে ডাকতাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে পাশে গিয়ে মাসি বলে ডাকলেও সাড়া পাইনি।” আইএনটিউউসি অনুমোদিত ট্যাক্সি-অ্যাম্বুল্যান্স ইউনিয়নের সদস্য রতন দে বলেন, “কয়েক দিন ধরে ওই বৃদ্ধা অসুস্থ ছিল। হাত-পা ফুলে গিয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তির কথা বললেও তিনি রাজি হননি।” বহরমপুর থানার আইসি মেহায়মেনুল হক বলেন, “বৃদ্ধার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। ওই বৃদ্ধার কোনও নাম ও ঠিকানা জানাতে পারেনি কেউই। পুলিশের তদন্ত চলছে।” |