কোনও অভিযুক্তকেই জামিন না-দিয়ে অনির্দিষ্ট কাল আটকে রাখা যাবে না আমরি-কর্তাদের জামিনের আবেদনের শুনানি চলাকালীন বুধবার সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের কথা উল্লেখ করলেন বিচারপতি অসীম রায়। সরকার পক্ষের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এ দিনও জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, আমরি-কর্তাদের জামিন সংক্রান্ত রায়ের দিকে সারা কলকাতা তাকিয়ে রয়েছে। বিচারপতি তখন বলেন, টু-জি মামলার তদন্তে ৩০০ জন ব্যক্তির সাক্ষ্য নেওয়া হয়। তার পরেও অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া হয়েছে। সে দিন গোটা ভারত ওই রায়ের দিকে তাকিয়েছিল। কলকাতা তো ভারতের একটি অংশ।
আমরি-কর্তাদের জামিনের আবেদনের শুনানি এ দিন শেষ করে দেন কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি অসীম রায় ও তরুণ গুপ্ত। আগামী সোমবারের মধ্যেই রায় দেবেন বলে জানিয়ে দেন তাঁরা।
এ দিন বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে সরকারি আইনজীবী জানান, আমরি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন ৭১ জন, এঁরা সকলেই অবশ্য এখন সুস্থ। রাজ্য সরকার তাঁদের চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়েছিল। আমরি কর্তৃপক্ষ কিছুই করেননি বলে দাবি করেন তিনি।
বিচারপতি জানতে চান, ওই ঘটনার সঙ্গে রাধেশ্যাম অগ্রবালের যোগ কোথায়। সরকার পক্ষ জানায়, তিনি ইমামি গোষ্ঠীর এগ্জিকিউটিভ চেয়ারম্যান। আমরিতে তাঁদের ৬৬% শেয়ার রয়েছে। রাধেশ্যামবাবুর পক্ষে জানানো হয়, তিনি আমরির দৈনন্দিন কাজে যুক্ত থাকতেন না। কল্যাণবাবু পাল্টা বলেন, তিনি সবই জানতেন। বোর্ড মিটিংয়ে হাজির না-থাকলেও তিনি সব বিষয়েই মতামত দিতেন। তিনি আরও বলেন, আমরি-কর্তারা দিনের পর দিন নিয়মের তোয়াক্কা না করে যে ভাবে হাসপাতাল চালিয়েছেন, তার জেরে এতগুলি অসহায় মানুষের মৃত্যু হয়েছে। জামিনে মুক্তি পেলে তাঁরা মামলা দুর্বল করার জন্য প্রভাব বিস্তার করবেন।
আমরি-কর্তাদের পক্ষে প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল বলাই রায় বলেন, আগুন লাগলে দমকলকে খবর দেওয়া যাবে না, পার্কিংয়ের জন্য অনুমোদিত স্থান গোডাউন বা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা হবে বলে কোনও সিদ্ধান্ত আমরির পরিচালন বোর্ড কখনও গ্রহণ করেনি। বলাইবাবু তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারার উল্লেখ করে বলেন, এই ধারা দিতে গেলে দেখাতে হয় যে ঘটনাস্থলে অভিযুক্তেরা হাজির ছিলেন। কিন্তু ঘটনার দিন বা ঘটনার সময় কোনও আমরি-কর্তা ঘটনাস্থলে ছিলেন না।
বিচারপতি জানতে চান, আমরির পরিচালন বোর্ডের সদস্য কত জন এবং চেয়ারম্যান কে? সরকার পক্ষ থেকে জানানো হয়, সরকারি প্রতিনিধি চিকিৎসক এস এন বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়ারম্যান ছিলেন। ৩১ অগস্ট তিনি অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে কোনও চেয়ারম্যান নেই। দুর্ঘটনার সময়ও কোনও চেয়ারম্যান ছিলেন না। বর্তমানে সরকারি প্রতিনিধি নেই। |