কৃষ্ণনগর শহরে বৃদ্ধকে গুলি করে খুনে উদ্বেগ
কটি চায়ের দোকানের মালিক হারানচন্দ্র বিশ্বাসকে তাঁর দোকানের সামনেই গুলি করে খুনের তদন্তে নেমে রীতিমতো ধন্দে পড়েছে পুলিশ। তবে দুষ্কৃতীরা গুরুত্বপূর্ণ সূত্র ছেড়ে যাওয়ার পরেও পুলিশ কেন তাদের সারা দিনে গ্রেফতার করতে পারল না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
মঙ্গলবার রাতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বৃদ্ধ হারানবাবুকে খুন করা হয়। ওই বৃদ্ধের পরিবারের লোকজনের দাবি, দুষ্কৃতীরা হারানবাবুর পূর্ব পরিচিত। তাঁর মেয়ে সুমিত্রা মণ্ডল এই দিন বলেন, “রাত সোওয়া আটটা নাগাদ দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে দুষ্কৃতীরা মোটরবাইকে করে দোকানের সামনে আসে। তারপরে আমার বাবাকে ‘হারানকাকা’ বলে ডাকতে থাকে। ওরা মোট পাঁচ জন ছিল। ওদের গলা শুনে আমি বাইরে বেরিয়ে আসি। তারা তখন আমাকে বলে বাবাকে ডেকে দিতে।” সুমিত্রা বলেন, “বাবা আর মা ঘর থেকে বেরিয়ে ওদের কাছে গেলে কেউ কিছু বোঝার আগেই বাবাকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়।” সেই সময়ে কাছেই স্নান করছিলেন হারানবাবুর ছোট ছেলে জীবন বিশ্বাস। সে ছুটে যেতে গেলে তাকে লক্ষ করেও গুলি ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। তারপরে মোটর বাইক ফেলে সকলে সামনের গলি দিয়ে ছুটে পালিয়ে যায়। তারা একটি মোবাইলও ফেলে রেখে গিয়েছে। তাঁর পরিবারের লোকজনদের দাবি, নিরীহ হারানবাবুর কারও সঙ্গে কোনও শত্রুতা ছিল না। তবে ওই মোবাইল ফোন ও মোটরবাইকের সূত্র ধরে দুষ্কৃতীদের দ্রুত সন্ধান পাওয়া সম্ভব বলে তাঁরা মনে করেন। জেলার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমণ মিশ্র বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি কারণই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।”
তবে এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, হারানবাবুর সঙ্গে পুলিশের সুসম্পর্ক ছিল। তাঁর দোকানের সামনেই ট্রাফিক পুলিশের দাঁড়ানোর জায়গা। প্রতিদিন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা তাঁর দোকানে চা খেতে আসতেন। সেখানে বসে কিছু ক্ষণ সময়ও কাটাতেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই দিন রাত সোওয়া আটটা নাগাদ ঘটনার সময়েও মাত্র হাত দশেক দূরেই দাঁড়িয়েছিলেন ট্রাফিক পুলিশের দুই কর্মী। গাড়ি পরীক্ষা করছিলেন আরও কয়েকজন পুলিশ কর্মী। গুলির শব্দ শুনে তাঁরা ছুটে এলেও তাঁদের কাছ থেকে বিশেষ কোনও সাহায্য মেলেনি বলে অভিযোগ করেছেন হারানবাবুর পরিবারের লোকজন।
পুলিশের একাংশের ধারণা, দুষ্কৃতীরা পেশাদার। না হলে যে ভাবে সন্ধ্যা-রাতে এসে তারা গুলি করে খুন করেছে, তা সাধারণ অপরাধীর পক্ষে সাহস হবে না। তারা স্থানীয় ব্যক্তি বলেও পুলিশের একাংশের ধারণা। শহরের এই এলাকা তারা খুবই ভাল চেনে। তবে শহরের বুকে এই ভাবে খুনের ঘটনায় উদ্বিগ্ন কৃষ্ণনগরের মানুষ। দিন কয়েক আগে খুন হন পার্থ সেন নামে এক তৃণমূল কর্মী। তারপরে হারানবাবু। দু’জনকেই প্রকাশ্যে খুন করা হল। পুরপ্রধান অসীম সাহা বলেন, “শহরের পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। পুলিশকে বারবার বলা সত্ত্বেও কোনও কাজ হচ্ছে না। কুখ্যাত সমাজবিরোধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।” দ্বিজেন্দ্রলালা কলেজের অধ্যক্ষ সাহজাহান আলির বক্তব্য, “পুলিশ প্রশাসনকে এখনই সতর্ক হতে হবে। না হলে কৃষ্ণনগর আবার পুরনো জায়গায় ফিরে যাবে।” জেলা শিশুকল্যাণ কমিটির চেয়ারপার্সন রিনা মুখোপাধ্যায় বলেন, “শহরের আইন শৃঙ্খলার অবনতি রুখতে হবে এখনই।” পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমণ মিশ্র বলেন, “বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। সমাজবিরোধীদের একে একে গ্রেফতার করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.