দুর্নীতির বিষয়ে কংগ্রেস এবং সিপিএমের মধ্যে কোনও ফারাক নেই। বহরমপুর পুরসভার ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকা প্রকাশ্য ‘নাগরিক সম্মেলন’ থেকে ওই অভিযোগ তোলা হয়। ওই দুই দলের দুর্নীতি থেকে মুর্শিদাবাদ জেলাকে বাঁচাতে সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী ও মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব দিয়েছেন বলেও বুধবার বহরমপুর গ্রান্টহলের মাঠের প্রকাশ্য সমাবেশ থেকে ঘোষণা করেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক সুবীর মুখোপাধ্যায়। মুশির্দাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতিকে ‘স্বঘোষিত রবিনহুড’ বলে কটাক্ষ করে সুবীরবাবু বলেন, “দুর্নীতিতে সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের কোনওই তফাৎ নেই। এ জেলার স্বঘোষিত রবিনহুড তো এখন লক্ষ্মণ শেঠের ফোন নম্বর খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তিনি কিন্তু মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।” আগামী বছরের নির্বাচনে কংগ্রেসের দখলে থাকা টানা তিন বারের বিরোধী শূন্য বহরমপুর পুরবোর্ড তৃণমূল দখল করবে বলে দাবি করেন রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বর্মণ। জবাবে জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, “মুর্শিদাবাদ জেলায় সিপিএমের বি টিমের ভূমিকায় থাকা তৃণমূল বরাবর এ রকম খোয়াব দেখতে অভ্যস্ত। অধীর চৌধুরীর নির্দেশিত উন্নয়নের জোয়ারে ওই দিবাস্বপ্ন বরাবরের মতো আগামীতেও অধরাই থেকে যাবে।”
এ দিনের ‘নাগরিক কনভেনশন’-এ তৃণমূল যুব কংগ্রসের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি উৎপল পাল বলেন, “টোল টাক্স বাবদ দৈনিক দু’লক্ষ টাকারও বেশি আদায় হলেও বহরমপুর পুরসভা সরকারি খাতায় দেখায় মাত্র ১৫-২০ হাজার টাকা। বাকি টাকা শহরের বিশেষ কিছু মানুষকে খুন করার কাজে লাগোনো হয়। সম্পত্তিকর, মিউটেশান ফি, ট্রেড লাইসেন্সের ফি, জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্রের নামে নাগরিকদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে মোটা টাকা আদায় করছে বহরমপুর পুরসভা।” তাঁর অভিযোগ, “বহুতল আবাসন গড়ে উঠছে পুরবিধি অমান্য করে। বাস টার্মিনাস তৈরি করার নামে পুরসভা প্রোমোটারি করেছে।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম পাল বলেন, “বিভিন্ন বিষয়ের জন্য পুরসভা ফর্ম ছাপিয়ে বিক্রি করছে। ৫০ পয়সার ফর্ম পুরসভার বিক্রি করছে ৫০ টাকায়। জলকর থেকে পাওয়া টাকার শতকরা ৩০ ভাগ একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কোষাগারে জমা পড়ছে।”
তৃণমূল শিক্ষা সেলের জেলা নেতা দিলীপ সিংহ রায় বলেন, “বিধবাভাতা ও বাধ্যকর্ভাতা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি চলছে। প্রতিবাদ করলেই খুনের হুমকি দিচ্ছেন।” স্বপনবাবু বলেন, “যাঁর কথায় বহরমপুর পুরসভা চলে তিনি এখানে প্রোমোটাররাজ চালাচ্ছেন আর কলকাতা গিয়ে কলকতা করপোরেশনের বিরদ্ধে বড় বড় কথা বলছেন!” পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, “পুরসভার মুখ্য উপদেষ্টা অধীর চৌধুরীর পরামর্শ মতোই সরকারি নিয়ম নীতি মেনেই যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজকর্ম চলছে। রাজ্য মূল্যায়ন পর্ষদের স্থির করে দেওয়া তালিকা অনুসারে সম্পত্তিকর ও হাইকোর্টের নির্দেশের বলে পথকর আদায় করা হয়। পুরসভার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সত্য হলে নাগরিকরা কী পর পর তিন বার বিরোধী শূন্য ভাবে পুরসভার দায়িত্ব কংগ্রেসের হাতে তুলে দিতেন?” |