গোঘাটের কাঁঠালি গ্রাম থেকে উদ্ধার হওয়া তামার কলসিভরা মুদ্রাগুলি ব্রিটিশ আমলের বলে জানিয়েছে রাজ্যের পুরাতত্ত্ব বিভাগ।
গোঘাট থানার হেফাজতে থাকা ওই মুদ্রাগুলির পুরাতাত্ত্বিক মূল্য বুধবার খতিয়ে দেখেন রাজ্যের পুরাতত্ত্ব বিভাগের উপ-অধিকর্তা অমল রায়। অমলবাবু বলেন, “মোট ২১ ধরনের চারটি মাপের ১৩০টি মুদ্রা পাওয়া গিয়েছে। বিভিন্ন মুদ্রার গায়ে ১৮৪০ সাল থেকে ১৯১৩ সাল খোদাই করা রয়েছে। অর্থাৎ, এগুলি ব্রিটিশ আমলের। তার মধ্যে বড় মুদ্রাগুলি রুপোর। ছোট মুদ্রাগুলিতে আপাত দৃষ্টিতে রুপোর সঙ্গে খাদ রয়েছে বলে মনে হয়েছে।” তিনি বলেন, “এই মুদ্রাগুলি খুবই উৎকৃষ্ট মানের। ওজনের হেরফের নেই। তবে সেগুলি কোন টাঁকশালের তা আমরা খতিয়ে দেখছি।”
|
গত শুক্রবার কাঁঠালি গ্রামের দিনমজুর অনিল নন্দী তাঁদের পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি তৈরি করতে ভিত খোঁড়াচ্ছিলেন। সেই সময়ে একটি তামার কলসিতে মুদ্রাগুলি মেলে। ওই গর্তেই দু’টি গোখরো সাপ থাকায় ‘যখের ধন’ মিলেছে বলে শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। গোঘাট-১ এর বিডিও জয়ন্ত মণ্ডল ঘটনাস্থলে পুলিশ নিয়ে যান। মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগীর নির্দেশ মতো থানার হেফাজতে রাখা হয় কলসিভরা মুদ্রাগুলি।
মুদ্রাগুলির যে পুরাতাত্ত্বিক মূল্য রয়েছে বলে জানান অমলবাবু। তিনি জানিয়েছেন, এমন মুদ্রা আগেও মিলেছে। ঐতিহাসিক ভাবে মধ্যযুগে গোঘাট যে গুরুত্বপূর্ণ এবং বর্ধিষ্ণু জনপদ ছিল, তা মান্দারণ এলাকার মাটি খুঁড়ে প্রাপ্ত সামগ্রী থেকে আগেই নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। এই মুদ্রাপ্রাপ্তি সে রকমই আর একটি নমুনা। যখন ব্যাঙ্ক ছিল না, তখন চোর-ডাকাতের ভয়ে অনেকে মেঝে বা দেওয়ালে গর্ত খুঁড়ে এ রকম সম্পত্তি নিরাপদে রাখতেন। এটা সে রকমই কোনও ঘটনা বলে মনে করছেন অমলবাবু।
মুদ্রাগুলি জাদুঘরে সংরক্ষণ করার কথা ভাবছে রাজ্যের পুরাতত্ত্ব বিভাগ। ওই বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাচীন মুদ্রার মালিকানা নিয়ে ১৯৭৮ সালের নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। সেই অনুযায়ী মুদ্রাগুলি যাতে জাদুঘরে সংরক্ষণ করা যায়, ইতিমধ্যে সে বিষয়ে বিভাগের তরফ থেকে জেলাশাসককে জানানো হয়েছে। তা ছাড়া মুদ্রাগুলির রাসায়নিক পরিচর্যাও জরুরি বলে মনে করছে পুরাতত্ত্ব বিভাগ। |