নিজস্ব সংবাদদাতা • চন্দননগর |
দু’দিন পেরিয়ে গেলেও চন্দননগর মহকুমা হাসপাতাল থেকে টেনে বের করে যুবককে মারধরের ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবারই ১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করেন জখম সুব্রত দে। অভিযুক্তেরা সকলেই অটো চালক। এসডিপিও তথাগত বসু বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সোমবার সকালে প্রকাশ্যে রিভলভার, ভোজালি নিয়ে কিছু উন্মত্ত যুবক যে ভাবে হাসপাতালে ঢোকে এবং গোটা চত্বরে দাপিয়ে বেড়ায়, তাতে চন্দননগর থানার ভূমিকায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। শহরবাসীর অভিযোগ, পুলিশি ব্যর্থতাতেই দুষ্কৃতীরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দিনের আলোয় সকলের চোখের সামনে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করছে। অথচ পুলিশ তাদের টিকি ছুঁতে পারছে না। ওই দিনের ঘটনায় নিরাপত্তার প্রশ্নে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন চিকিৎসক এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশের কাছে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। ইতিমধ্যেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ওই হাসপাতালে পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থার আর্জি জানানো হয়েছে। ঘটনার পরে দু’দিন কেটে গেলেও সে ভাবে পুলিশি নজরদারি আদৌ চোখে পড়েনি ওই হাসপাতাল চত্বরে।
অভিযোগ, ভদ্রেশ্বর স্টেশন লাগোয়া জায়গায় সাট্টা ও জুয়া খেলার প্রতিবাদ জানানোয় কিছু দিন ধরেই সুব্রতবাবুকে সেখানকার কিছু অটোচালকের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছিল। সুব্রতবাবুও ভদ্রেশ্বর স্টেশন থেকে চন্দননগর মহকুমা রুটে অটো চালাতেন। কিন্তু সাট্টা-জুয়ার প্রতিবাদ করায় ওই স্ট্যান্ডে অটো রাখতে দেওয়া হচ্ছিল না। তাতে অবশ্য পিছু হঠেননি প্রতিবাদকারী ওই যুবক। সেই কারণেই তাঁকে ‘উপযুক্ত শিক্ষা’ দিতে কিছু দুষ্কৃতীকে সঙ্গে নিয়ে অটোচালকদের একাংশ রাস্তায় নামে। সোমবার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে চন্দননগর হাসপাতালে গিয়েছিলেন ডাক্তার দেখাতে। অভিযোগ, সশস্ত্র হামলাকারীরা চিকিৎসকের ঘর থেকে টেনে বের করে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করে সুব্রতবাবুকে। তাঁর স্ত্রী শিবানীদেবীকেও রেয়াত করা হয়নি। সুব্রতবাবু ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।
সুব্রতবাবুকে মারধরের ঘটনায় যে অটোচালকদের একাংশও ছিলেন, সে কথা মেনে নিয়েছে সংশ্লিষ্ট রুটের অটোচালকদের সংগঠন। ভদ্রেশ্বর স্টেশন অটো কমিটির সদস্য বিশ্বজিৎ বসাক বলেন, “সুব্রত এক সহকর্মীকে মারধর করেছিল। কিছু অটোচালকের নামে থানায় মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছিল। তাতেই অটোচালকেরা রেগে গিয়েছিলেন। তবে ওই ভাবে মারধর করা অনুচিত হয়েছে।” বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, “আমাদের রুটের কোনও অটোচালক জুয়া বা সাট্টা খেলার সঙ্গে যুক্ত নন। আসলে ওর দুর্ব্যবহারের জন্যই ওকে এই স্ট্যান্ডে দাঁড়াতে দেওয়া হয় না।” রুটের অটো চলাচল অবশ্য স্বাভাবিক রয়েছে। |