ধান বিক্রির ‘চেক বাউন্স’ সাঁইথিয়ায়
চালকলে ধান বিক্রির চেক ‘বাউন্স’ করার অভিযোগ এ বার উঠল সাঁইথিয়ায়। স্থানীয় কয়েক জন চাষি মদনপুরের একটি চালকল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার সাঁইথিয়ার বিডিও-র কাছে লিখিত ভাবে ওই অভিযোগ করেন। বীরভূমের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “এই ঘটনার কথা জানতাম না। তবে এমন হওয়া উচিত নয়। জেলা খাদ্য নিয়ামককে গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখতে বলছি।”
সরকারের নির্দেশ, চাষিদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার পরে নগদের পরিবর্তে ‘চেক’ দিতে হবে। কিন্তু সেই চেক জমা দেওয়ার পরে ‘বাউন্স’ করার অভিযোগ এর আগেও উঠেছে মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান ও উত্তরবঙ্গে। এ বার সেই তালিকায় যোগ হল সাঁইথিয়ার নাম। বিডিও উৎপল চক্রবর্তী বলেন, “অভিযোগ পেয়ে জেলা খাদ্য নিয়ামককে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।” জেলা খাদ্য নিয়ামক নিত্যরঞ্জন পোদ্দার বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে।”
সাঁইথিয়া ব্লকের সলফা গ্রামের সাফ্ফর নিয়াজ, মাজিগ্রামের তপনকুমার মণ্ডল, রঙাইপুরের মহম্মদ ইউনুস এবং নবডাঙাল গ্রামের সিরাজুল হক ও এনামুল হকদের অভিযোগ, “মদনপুরের চালকল কর্তৃপক্ষ প্রথমে আমাদের কাছ থেকে ধান কিনতে চাইছিল না। বিস্তর অনুরোধের পরে ১০ জানুয়ারি তাঁরা আমাদের ধান কেনেন। দাম চেয়ে ফের অনুনয় জানালে ২০ জানুয়ারি আমাদের ধান বিক্রি করার চেক দেন। সেই চেক ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হয়। দিন দশেক পরে ব্যাঙ্ক থেকে জানানো হয়, চালকল মালিকের অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেকগুলি ‘বাউন্স’ করেছে।” চাষিদের ক্ষোভ, ধানের দাম তো তাঁরা পেলেনই না, উল্টে ‘চেক বাউন্স’ করায় তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কাটা গিয়েছে।
তৃণমূলের সাঁইথিয়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি, দেড়িয়াপুরের বাসিন্দা সাধন মুখোপাধ্যায় নিজেও চাষবাস করেন। তাঁর অভিযোগ, “ওই চালকলে ধান বিক্রি করে অনেক চাষিই টাকা পাচ্ছেন না। চেকও বাউন্স করেছে।” সাঁইথিয়া শহর তৃণমূল সভাপতি মানস সিংহ বলেন, “প্রতিদিন আশপাশের গ্রাম থেকে লোকজন এসে বলছেন, তাঁদের ধান বিক্রির চেক বাউন্স করেছে। টাকার অভাবে তাঁরা বোরো চাষ করতে পারছেন না।” ওই চালকল মালিক আনন্দ সাহার অবশ্য দাবি, “বাবার অসুস্থতা ও পরে মৃত্যু হওয়ায় সময় মতো ব্যাঙ্কে টাকা জমা করতে পারিনি। সেই জন্য কয়েক জনের চেক বাউন্স করেছে। তবে যাঁদের চেক বাউন্স করেছে, তাঁদের ডেকে টাকা দিচ্ছি।” বীরভূম জেলা রাইসমিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দীপক প্রামাণিক বলেন, “চেক বাউন্স করার ঘটনা কোনও ভাবেই আমরা বরদাস্ত করব না। এক চাষি আমার কাছে মৌখিক ভাবে এই অভিযোগ করেছেন। তাঁকে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানাতে বলেছি। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে ওই চালকলের বিরুদ্ধে সংগঠনগত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ধান বিক্রি করার পরে চেক সময় মতো দেওয়া হচ্ছে না বলেও জেলার কিছু চালকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। আইএনটিইউসি নেতা তথা মল্লারপুরের কৃষিজীবী জহর রায় ও মাঠপলসার বাসিন্দা, তৃণমূল নেতা সমীর মিশ্রের দাবি, “চালকলে ধান কেনার সময় নানা রকম অজুহাত খাড়া করা হচ্ছে। চালকলে ধান নিয়ে গিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করার জন্য বাড়তি মজুরি চাইছেন শ্রমিকরা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ধান কেনার পরে চেক দিয়ে বলা হচ্ছে দিন কুড়ি পরে ব্যাঙ্কে চেক জমা করতে। নিয়ম বিরুদ্ধ ভাবেই এই কাজ চলছে।” জেলা খাদ্য নিয়ামক বলেন, “চাষিদের চেক দিয়ে কয়েক দিন পরে তা ব্যাঙ্কে জমা করতে বলা নীতি বর্হিভূত কাজ। আমরা খোঁজ নিচ্ছি। এমন চলতে দেওয়া যাবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.