জামিন পেলে আমরি-কর্তারা যদি টাকা দিয়ে সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন, তা হলে রাজ্য সরকারের টাকা দেওয়াকে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা বলা হবে না কেন, প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। আমরি অগ্নিকাণ্ড মামলায় মঙ্গলবারই আদালত সরকার পক্ষের কাছে জানতে চেয়েছিল, এত দিন ধরে হাসপাতালের কর্তাদের আটকে রাখার প্রয়োজনীয়তা কী? যার জবাবে সরকার পক্ষের তরফে বলা হয়, জামিন পেলে আমরি-কর্তারা টাকা ঢেলে মামলাকে প্রভাবিত করতে পারেন, এমন আশঙ্কা রয়েছে। তার পরেই রাজ্য সরকারের টাকা দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত।
বিচারপতি অসীম রায়ের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য সরকারের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কল্যাণকামী সরকার সব সময়েই বিপন্নদের পাশে দাঁড়ায়। ক্ষতিপূরণ দেয়। আমরি হাসপাতাল লাগোয়া বস্তির যে সব মানুষ সে দিন বিপন্ন রোগীদের উদ্ধারে এগিয়ে এসেছিলেন, সরকারের কর্তব্য তাঁদের উৎসাহিত করা। তাঁর কথায়, “সরকারের সঙ্গে আমরি-কর্তাদের তুলনা চলে না। এমন কোনও খারাপ কাজ নেই, যা ওঁরা করতে পারেন না।”
আমরি-কর্তাদের গ্রেফতারের পরে ৬৮ দিন কেটে গেলেও এখনও তাঁদের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করা হচ্ছে কেন, তা এ দিনও জানতে চান বিচারপতি। জবাবে কল্যাণবাবু বলেন, ৬৮ মোটেই বেশি দিন নয়, ৯০ দিন পেরোলে বেশি হবে। যার ব্যাখ্যা হিসেবে সরকারি তরফে বলা হচ্ছে, ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে চার্জশিট দেওয়ার বিধি রয়েছে। অপরাধী কুখ্যাত না-হলে বা বিশেষ কারণ না-থাকলে চার্জশিট দেওয়ার পর সাধারণত জামিন মঞ্জুর করা হয়।
কেন জামিনের বিরোধিতা করা হচ্ছে, তা ব্যাখ্যা করে কল্যাণবাবু বলেন, গত অক্টোবরেও আমরিতে আগুন লাগে। তখন এক কর্মী দমকলে খবর দেওয়ায় তাঁকে আমরি কর্তৃপক্ষ সাসপেন্ড করেন। কল্যাণবাবু সেই সাসপেনশন নোটিশটিও বিচারপতিকে দেখান। তিনি বলেন, এত মানুষ যেখানে মারা গিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী, অন্যান্য মন্ত্রী, অফিসারেরা ঘটনাস্থলে এবং এসএসকেএম হাসপাতালে সারা দিন দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তখন এক জন আমরি-কর্তারও দেখা মেলেনি।
বিচারপতি বলেন, রাধেশ্যাম অগ্রবাল গোটা ২০১১ সালে একটিও বোর্ড মিটিংয়ে যাননি। তা হলে তাঁকে আাটকে রাখার প্রয়োজন কোথায়? সরকারি আইনজীবী বলেন, ২০০৬ সাল থেকে বার বার হাসপাতালের নিয়ম ভাঙা হয়েছে। পার্কিং এলাকায় অনুমতি না-নিয়ে ওষুধের দোকান, গোডাউন বানানো হয়েছে। এ সবই রাধেশ্যাম অগ্রবালের মতামত নিয়েই হয়েছে। বোর্ড মিটিংয়ে না-থাকলেও কিছুই তাঁর অজানা ছিল না। আজ, বুধবার ফের মামলার শুনানি হবে। |