মুকুটমনিপুর-ছাতনা রেল প্রকল্পের জমিহারারা অবিলম্বে পরিবার পিছু এক জনকে রেলে চাকরি দেওয়ার দাবি তুললেন। এই দাবিতে মঙ্গলবার ছাতনা রেল স্টেশনে সভা করলেন জমিদাতাদের একাংশ। সিপিএমের স্থানীয় সাংসদ তথা রেলের স্থায়ী কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়া জমিহারাদের দাবির পক্ষে বক্তব্য রাখেন। পরে তাঁরা ছাতনার স্টেশন ম্যানেজারের কাছে কয়েক দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই সভায় বিজেপি নেতাও উপস্থিত ছিলেন। আদ্রার ডিআরএম অমিতকুমার হালদার বলেন, “রেলের কাছে কিছু দাবি নিয়ে এ দিন ছাতনায় সভা হয়েছে বলে শুনেছি। ছাতনা-মুকুটমনিপুর রেল পথ নির্মাণের কাজের দায়িত্বে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সদর দফতরের চিফ অ্যাডমিনিস্টেটিভ অফিসার (কনস্ট্রাকশন)। তাঁরাই এ ব্যাপারে বলতে পারবেন।” |
ছাতনা থেকে মুকুটমনিপুর পর্যন্ত প্রায় ৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেল পথ তৈরির কাজ চলছে। ওই প্রকল্পে জমি দেওয়া বাসিন্দারা এ দিনের সভায় ছিলেন। ছাতনার বাসিন্দা শ্রীরাম বাগদি, মধুসূদন বাগদিরা বলেন, “আমরা চাষ করে পরিবার চালাতাম। রেল আমাদের চাষের জমি অধিগ্রহণ করেছে। কিন্তু বাজার মূল্যের থেকে কম দাম দিয়েছে। ওই টাকায় সামান্য ব্যবসা করে যা আয় হচ্ছে, তাতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।” জমিহারাদের ওই সভায় ছিলেন ছাতনার বাসিন্দা বিজেপি জেলা সহ সভাপতি জীবন চক্রবর্তী ও স্থানীয় আরএসপি নেতা রামকৃষ্ণ দেওঘরিয়া। তাঁরা বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেল মন্ত্রী থাকাকালীন ঘোষণা করেছিলেন, রেলকে জমি দিলে চাকরি দেওয়া হবে। আমরা রেল পথ তৈরির জন্য জমি দিয়েছি, কিন্তু চাকরি পাইনি।” তাঁদের দাবি, দলমত নির্বিশেষে জমিহারারা এই সভায় এসেছেন। ‘ছাতনা-মুকুটমনিপুর রেল প্রকল্পে জমিহারাদের কমিটি’ গঠন করে তাঁরা সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে জমির নায্য দাম ও চাকরি দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করছেন। ওই কমিটির সভাপতি তথা সিপিএমের ছাতনা লোকাল কমিটির প্রাক্তন সদস্য শিশির মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের দাবি পূরণ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। আদ্রার ডিআরএমের কাছেও দাবি জানাব।”
সাংসদ বাসুদেববাবু বলেন, “বেশ কয়েক বছর আগে জমি অধিগ্রহণ করে ছাতনা-মুকুটমনিপুর রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেল প্রকল্পের জন্য জমিদাতাদের চাকরি দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু আদপে তা হয়নি। জমিহারাদের দাবি রেল কর্তৃপক্ষকে মানতে হবে।” তিনি জানান, বিষয়টি লোকসভায় তুলবেন। ছাতনার স্টেশন ম্যানেজার পরিমল সরকার বলেন, “তাঁদের দাবিপত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।” |