ভালবাসার বাজার দখলের লড়াই! বাংলা বনাম বেঙ্গালুরুর। বাংলার ‘মিনি কুইন’-এর সঙ্গে লড়াইয়ে বাজারে সমানতালে পাল্লা দিচ্ছে বেঙ্গালুরুর ‘ডাচ’ গোলাপ। আজ, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টাইনস ডে’। প্রেমের দিন। ফুল বাজারে ওই দুই গোলাপের এমন জমজমাট লড়াই সামলাচ্ছেন ব্যাবসায়ীরা। তা নিয়ে সরগরম কোচবিহারের ফুলবাজার। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছরের মত এবারেও ভ্যালেন্টাইনস ডে উপলক্ষে রাতারাতি গোলাপের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে। সোমবার সকাল থেকেই উৎসাহী কলেজ পড়ুয়া তরুণী থেকে সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখা যুবকের মত অসংখ্য ক্রেতার ভিড় উপচে পড়ে শহরের ফুলবাজারে। তাঁদের মধ্যে একদল ঝুঁকছেন বেঙ্গালুরুর ডাচ গোলাপে। আবার একদলের পচ্ছন্দ বাংলার মিনি কুইনই। |
প্রিয়জনের জন্য ভালাবাসার গোলাপ যুদ্ধে যাঁরা যেতে চান না, তাঁদের অনেকেই আবার এক সঙ্গে কিনে নিচ্ছেন দুই প্রজাতির টাটকা গোলাপ কুঁড়ি। কোচবিহার ফুল ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তা নীরেন দেব বলেন, “বাজারে দুই ধরণের গোলাপের চাহিদাই রয়েছে। ডাচ আর মিনিকুইনের মধ্যে কি ফারাক? কোনটি বেশিদিন সতেজ থাকবে? দামের ফারাক কেমন? এসব নানা প্রশ্ন সামলাতে হচ্ছে। মঙ্গলবার রাত না পার হলে বাজার দখলে কিস্তিমাত বাংলা না বেঙ্গালুরুর তা স্পষ্ট হবে।” বেঙ্গালুরুর ডাচ প্রজাতির গোলাপের হরেক রং। গাঢ় লাল, মিষ্টি হলুদ, হালকা গোলাপী রঙের বাহারি গোলাপ গত রবিবার রাতেই কোচবিহারের ফুলবাজারে চলে এসেছে। তার মধ্যেও কোনটি পুরোপুরি ফুঁটে গিয়েছে। কোনটি আবার সদ্য ফোঁটা। কুঁড়িও রয়েছে দেদার। প্রতিটি গোলাপের ডাটি বেশ লম্বা, সবুজ পাতার সমারোহ যার বাড়তি আকর্ষণ। কলকাতা থেকে পাইকারি ব্যাবসায়ীদের মাধ্যমে আগাম বরাত দিয়ে ওই গোলাপ আনা হয়েছে। অন্যদিকে টকটকে সদ্য ফোঁটা লাল ‘মিনি কুইন’ এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে। তুলনামূলক ভাবে আকারে কিছুটা ছোট হলেও নজরকাড়ায় এতটুকুও কমতি নেই। দামও ডাচের তুলনায় বেশ কম। ফুল ব্যবসায়ী বিজয় রায়, রাহুল চৌধুরীরা জানান, গতবার দাম কিছুটা কম ছিল। |
এবার চাহিদার সঙ্গে পরিবহণ খরচ বেড়েছে। অথচ আমদানি কম। দুটিও মজুত করা হয়েছে। ডাচের ডাঁটি জলে ভিজিয়ে রাখলে তা কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সতেজ থাকে। আর মিনি কুইন একসপ্তাহ। ফুল বিক্রেতারা জানান, ‘ডাচ’ গোলাপের তুলনায় ‘মিনি কুইন’-এর দাম কম। ফুল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, জেলার ছাড়াও উত্তরবঙ্গে প্রচুর পরিমাণে বাণিজ্যিকভাবে গোলাপ চাষ হলে ক্রেতারা যেমন কম দামে গোলাপ পেতেন তেমনি বাইরে থেকে ফুল আনার সমস্যাও এড়ানো যেত। কোচবিহারের উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক খুরশিদ আলম বলেন, “বৃষ্টি বেশি হয় বলে কোচবিহার জেলায় বাণিজ্যিকভাবে গোলাপ চাষে সমস্যা রয়েছে। তবু আমরা পরীক্ষা মূলক ভাবে উদ্যোগ নিয়েছি।” |