মাইক বাজানোর ‘প্রতিবাদ’ করায় ‘মারধর’ ভাটপাড়ায়
বাড়ির সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ‘তারস্বরে’ মাইক বাজানোয় তাঁর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়ের পড়াশোনার অসুবিধা হচ্ছে বলে পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছিলেন জুটমিলের কর্মী দেবাশিস পাল। রবিবার রাতে ভাটপাড়ার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওই অনুষ্ঠানের ব্যাপারে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর ‘অপরাধে’ তাঁকে মারধর করা হয় বলে দেবাশিসবাবুর অভিযোগ। ওই অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা তথা এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর মোহন দাস অবশ্য মারধরের অভিযোগ মানতে চাননি। ভাটপাড়ার পুরপ্রধান তথা স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ দাবি করেছেন,
ওই অনুষ্ঠানে মাইক ব্যবহারই করা হয়নি।
এলাকার জনাতিরিশ বাসিন্দা অবশ্য সোমবার ভাটপাড়া তদন্ত কেন্দ্রে দেবাশিসবাবুর বিরুদ্ধে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। তাতে দাবি করা হয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে মাইক বাজানো হয়নি। দেবাশিসবাবুর ‘মিথ্যা’ অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অনুষ্ঠানটি তাড়াতাড়ি শেষ করে দেওয়ায় তাঁদের ছেলেমেয়েরা ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেনি। ব্যারাকপুরের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “দু’টি অভিযোগই পেয়েছি। তদন্তও শুরু হয়েছে।” শব্দ দূষণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রতিবাদীর মৃত্যুও দেখেছে এই রাজ্য। দিনকয়েক আগেই পুরুলিয়ার বরাবাজারের হেরবনা গ্রামে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করে আক্রান্ত হন এক ব্যক্তি। বাড়িতে বৃদ্ধা মা থাকায় সরস্বতী পুজোর বিসর্জনে তারস্বরে মাইক না বাজাতে অনুরোধ করেছিলেন তিনি। বছর আটচল্লিশের দেবাশিসবাবুর দাবি, শব্দদূষণের প্রতিবাদ করায় তাঁরও ‘তিক্ত’ অভিজ্ঞতা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাবুপাড়া রোডে একটি স্কুলের সামনের মাঠে রবিবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ওই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্যোক্তা মূলত ওয়ার্ড কমিটির লোকজন। দেবাশিসবাবুর দাবি, তাঁর তিন তলার ঘরে জানালার সামনের বিদ্যুতের খুঁটিতে বড় মাইক লাগানো হয়েছিল। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই ‘প্রচণ্ড জোরে’ মাইক বাজছিল। বাড়িতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়ে থাকায় তিনি পুলিশের কাছে মাইক বাজানো বন্ধ করতে অনুরোধ করেন। দেবাশিসবাবুর দাবি, পুলিশ মাইক বাজানো বন্ধ করে। কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়ার পরে ফের মাইক বাজানো শুরু হয়। তাঁর অভিযোগ, রাত ১০টা নাগাদ দুই তৃণমূল কর্মী শৈলেন্দ্রনাথ দাস এবং আশিস বিশ্বাস এক দল ছেলে নিয়ে তাঁর বাড়িতে ‘চড়াও’ হন। সেই সময় তিনি বাড়ি ছিলেন না। তাঁর মেয়ে এবং স্ত্রীকে একপ্রস্ত ‘শাসানো’ হয়। রাতে বাড়ি ফেরার পথে ওই যুবকেরা তাঁকে ‘মারধর’ করে। এ দিনই তিনি মারধরের ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করেন।
অভিযুক্ত দুই তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে বহু চেষ্টাতেও যোগাযোগ করা যায়নি এ দিন। তবে স্থানীয় কাউন্সিলর মোহন দাস বলেন, “দেবাশিসবাবু আমাকে বা অন্য কোনও উদ্যোক্তাকে ওঁর আপত্তির কথাও জানাননি। উনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলেন কেন সেটাই ওঁর বাড়িতে জানতে গিয়েছিল এলাকার ছেলেরা। ওঁর বাড়িতেও কেউ চড়াও হয়নি। মারধরও করা হয়নি।” বিধায়ক অর্জুন সিংহের বক্তব্য, “বিদ্যুতের খুঁটিতে মাইক লাগানোই হয়নি। স্কুলের ঘেরা মাঠে ছোট ‘বক্স’ বাজানো হয়েছিল।
তার আওয়াজ মাঠের বাইরে যায়নি। তা ছাড়া, আরও অনেক পরীক্ষার্থী রয়েছে। তাদের অভিভাবকেরা তো কেউ অভিযোগ করলেন না!”
নিজস্ব চিত্র



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.