রাজনৈতিক অস্থিরতা অব্যাহত জেলা জুড়েই
তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষ, সিপিএম নেতার বাড়িতে হামলা, পুলিশকে বাধাদানরাজনৈতিক উত্তেজনার যেন শেষ নেই পশ্চিম মেদিনীপুরে। সোমবার এমনই নানা ঘটনায় ফের অস্থির জনজীবন।
গড়বেতার লেদাগামারে এক সিপিএম নেতাকে ‘আড়াল’ করা হচ্ছে অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ দেখিয়েছে শাসক তৃণমূলের লোকজন। বাড়তি পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়। এক তৃণমূল কর্মীকে আটকও করেছে পুলিশ। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, যাঁকে ‘আড়াল’ করার চেষ্টার অভিযোগে সোমবার পুলিশের গাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয়, তাঁর নাম অরুণ গোস্বামী। অরুণবাবু সিপিএমের আমলাগোড়া লোকাল কমিটির সম্পাদক। স্থানীয় লেদাগামার প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করেন। রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই গড়বেতা তৃণমূলের ‘নিয়ন্ত্রণে’। অরুণবাবুও দীর্ঘ দিন এলাকা ছাড়া ছিলেন। পরে অবশ্য ঘরে ফেরেন। কিন্তু, তৃণমূলের বাধায় স্কুলে যেতে পারছিলেন না। সোমবার স্কুলে গিয়ে হাজিরা দেওয়ার চেষ্টা করেন অরুণবাবু। আর ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় গোলমাল।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে জেনে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশও। পুলিশের গাড়ি ঘেরাও করেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তৃণমূল কর্মীরা। পুলিশের কাছে তাঁরা দাবি জানান, ওই সিপিএম নেতার হাজিরা কেটে দিতে হবে। পুলিশ জানিয়ে দেয়, এ ক্ষেত্রে তাদের কিছুই করণীয় নেই। বরং এলাকায় অশান্তি তৈরির চেষ্টা হলে তারা পদক্ষেপ করবে। বাড়তি পুলিশ পৌঁছয়। শেষমেশ আলোচনার মাধ্যমেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ওই শিক্ষকও বাড়ি ফেরেন। জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষের দাবি, “ওই সিপিএম নেতার মদতে সাধারণ মানুষের উপর অনেক অত্যাচার হয়েছে। ফলে, মানুষের ক্ষোভ স্বাভাবিক। তবে পুলিশের গাড়ি ঘেরাও সমর্থন করি না। এ রকম ঘটনায় দলের কেউ জড়িত নন।”
এ দিনই দুপুরে ঝাড়গ্রামের চন্দ্রি অঞ্চলের আউশপাল গ্রামে সিপিএম নেতা নেতা প্রশান্ত দাসের বাড়ি লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছোড়ারও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। প্রশান্তবাবুর দাদা জয়ন্ত দাসের বাড়ি-লাগোয়া মুদি দোকানটিও জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, তাদের দলীয় পতাকা ছিড়ে দেয় সিপিএমের লোকেরা। এর জেরেই উত্তেজিত গ্রামবাসী প্রশান্তবাবুর বাড়ি লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছোড়েন। গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ আউশপাল গ্রামে যায়। তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই সিপিএম সমর্থককে আটক করে। ইট-পাটকেল ছোড়ার অভিযোগে অবশ্য কেউ ধরা পড়েনি। প্রশান্তবাবু অবশ্য কয়েক মাস ধরেই আউশপালে থাকছেন না। স্থানীয় সূত্রের খবর, গত শনিবার রাতে গ্রামের দিঘিতে মাছ ধরা নিয়ে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ বেধেছিল। তাতে সিপিএমের কয়েক জন জখমও হন। তার জেরে এ দিন ফের উত্তেজনা ছড়ায় বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
অশান্ত চন্দ্রকোনাও। ব্রহ্মঝারুলে সোমবার সকালের সিপিএম-তণমূল সংঘর্ষে দু’পক্ষের অন্তত ৮ জন জখম হন। তাঁদের মধ্যে ৫ জনই তাদের কর্মী-সমর্থক বলে দাবি তৃণমূলের। আহত দীপক মুখোপাধ্যায়, কল্পনা পাত্রদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। রবিবারই কালিকাপুরে সিপিএম নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএমের একটি দলীয় কার্যালয় খোলা নিয়েই বিবাদের সূত্রপাত। সোমবার ব্রহ্মঝারুলে হামলা কালিকাপুরেরই ‘পাল্টা’ বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। এ দিনের গোলমালে মূল অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধেই। যদিও সিপিএমের জোনাল সম্পাদক গুরুপদ দত্তের দাবি, “শুরুতে তৃণমূলের লোকজন আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা চালায়। তার পর প্রতিরোধ হয়।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি চিত্ত পালের অভিযোগ, “এলাকায় নতুন করে সন্ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা করছে সিপিএম।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.