|
|
|
|
রাজ্য সম্মেলনে ‘পর্যবেক্ষক’ সভাধিপতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
জেলা কমিটিতে তাঁর নাম নেই। জেলা থেকে রাজ্য সম্মেলনের জন্য যে প্রতিনিধি-তালিকা তৈরি করা হয়েছে, সেখানেও তাঁর নাম নেই। শেষ পর্যন্ত সিপিএম রাজ্য কমিটিই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যকে রাজ্য সম্মেলনে জেলার ‘পর্যবেক্ষক’ মনোনীত করল। এ ঘটনায় জেলা সিপিএমের অন্দরে শোরগোল পড়েছে। অন্তরাদেবীকে জেলা কমিটিতে না-রাখার ‘প্রতিবাদে’ আগেই সোচ্চার হয়েছিলেন দলের একাংশ। সিপিএম রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে জেলায় দলের সেই ক্ষুব্ধ অংশ যেমন ‘খুশি’, তেমনই কিছুটা অস্বস্তিতে জেলা নেতৃত্ব।
সদ্য-সমাপ্ত সিপিএম জেলা সম্মেলন থেকেই রাজ্য সম্মেলনের জন্য প্রতিনিধিদের নাম চূড়ান্ত হয়। জেলা কমিটি কিংবা রাজ্য সম্মেলনের প্রতিনিধি, দু’টো ক্ষেত্রেই জেলা সম্পাদক দীপক সরকারদের পেশ করা তালিকাই ‘সর্বসম্মতিক্রমে’ গৃহীত হয়। তবে, জেলার একাংশ নেতা-কর্মীর মধ্যে নানা প্রশ্ন ছিলই। দলীয় সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে দলের ৪৯ জন প্রতিনিধি এ বার রাজ্য সম্মেলনে যোগ দেবেন। কিন্তু, ওই ৪৯ জন নেতানেত্রীর মধ্যে এমন কয়েক জন রয়েছেন, যাঁরা বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে ‘ফেরার’। সিবিআই কিংবা সিআইডি-র হাতে ধরা পড়ার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পরিস্থিতি দেখে ‘বিকল্প প্রতিনিধি তালিকা’ও তৈরি করা হয়। ওই তালিকায় সব মিলিয়ে ১৭ জনের নাম রয়েছে। জেলা সিপিএমের এক প্রবীণ নেতার বক্তব্য, “জেলা সম্মেলন থেকেই রাজ্য সম্মেলনের প্রতিনিধিদের নাম চূড়ান্ত হয়। এটাই দস্তুর। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রতিনিধি-তালিকায় নাম থাকলেও কেউ কেউ অসুস্থতার জন্য রাজ্য সম্মেলনে যেতে পারছেন না। সে ক্ষেত্রেও বিকল্প তালিকা থেকেই প্রতিনিধি নেওয়া হয়।” তাঁর কথায়, “এ বার পরিস্থিতি কিছুটা অন্য রকম। কয়েক জন নেতানেত্রী বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে আত্মগোপন করে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এই বিষয়টাও এ বার বিকল্প তালিকা তৈরির সময়ে মনে রাখা হয়েছে।”
সাধারণত, জোনাল সম্পাদকদের জেলা কমিটির সদস্য করা হয়। কিন্তু, এ বার কয়েক জন জোনাল সম্পাদককেও জেলা কমিটির সদস্য করা হয়নি। এ নিয়েও দলের অন্দরে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠেছে। একই রকম ভাবে রাজ্য সম্মেলনের জন্য প্রতিনিধি তালিকা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে। ওই তালিকায় নাম রয়েছে তুষার পঞ্চাননের। যাঁকে এ বারই জেলা কমিটি থেকে ‘অব্যাহতি’ দেওয়া হয়েছে। প্রাক্তন এক জোনাল সম্পাদকের বক্তব্য, “তুষারবাবুকে যখন জেলা কমিটিতেই রাখা হল না, তখন তাঁকে রাজ্য সম্মেলনের প্রতিনিধি করা হল কেন তা বোধগম্য হচ্ছে না।” রাজ্য সম্মেলনের প্রতিনিধি-তালিকায় নাম রয়েছে মানিক সেনগুপ্ত, সুকুর আলি, আহমেদ আলি, কৃষ্ণপ্রসাদ দুলে, শ্যাম পাণ্ডে, অনুজ পাণ্ডে, তপন ঘোষ, ফুল্লরা মণ্ডল, মেঘনাদ ভুঁইয়া’দের মতো ‘ফেরার’ নেতানেত্রীদেরও। রাজ্য সম্মেলনে তাঁদের উপস্থিত এক প্রকার অসম্ভব। তার পরেও প্রতিনিধি-তালিকায় তাঁদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দলের একাংশে। যেমন প্রশ্ন ছিল, জেলা কমিটির সদস্য বা রাজ্য সম্মেলনের প্রতনিধি হিসাবে অন্তরাদেবীর নাম বিবেচিত না-হওয়ায়। আপাতত রাজ্য নেতৃত্ব অন্তরাদেবীকে পর্যবেক্ষক করে অন্তত সে প্রশ্নে ক্ষোভ সামাল দিলেন। |
|
|
|
|
|