লোপাট হয়ে যাচ্ছে শাল-সেগুনের বন
ক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে চলায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পরিবেশপ্রেমীদের অভিযোগ, নজরদারি না-থাকায় দুষ্কৃতীরা জঙ্গলের মূল্যবান শাল ও সেগুন গাছ কেটে সাফ করছে। বনমন্ত্রী হিতেন বর্মনও ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন। বনমন্ত্রী বলেন, “নজরদারিতে কোনও ত্রুটি নেই। সে জন্যই তো নজরে এসেছে। আমাদের কাছে খবর আছে চা বাগান এলাকা দিয়ে দুষ্কৃতীরা জঙ্গল ঢুকছে। বিষয়টি নিয়ে চা বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিটিং করা হয়েছে। তাঁদের বলা হয়েছে কাঠ চুরি করে কেউ চা বাগান এলাকায় লুকিয়ে রাখলে যেন বন দফতরে খবর দেওয়া হয়। না-হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ২৮ মাইল জঙ্গলে কাঠ চুরির ঘটনা তদন্ত করা হবে।” বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা জেভি ভাস্কর জানান, বক্সাদুয়ার রেঞ্জের বক্সা রোড বিটের আধীন ২৮ মাইল জঙ্গলের ৯ নম্বর কম্পার্টমেন্টে বেশ কিছু পুরোনো শাল-সেগুন গাছ লোপাট হয়েছে। কয়েক মাস আগে ওই এলাকা থেকে কয়েক জন কাঠ চোরকে ধরা হয়।
নিজস্ব চিত্র।
তিনি বলেন, “খোঁজ নিয়ে জেনেছি চিনচুলা ও গাঙ্গুটিয়া চা বাগান এলাকা দিয়ে কাঠ চোরের দলটি জঙ্গলে ঢুকছে। বাইরের কিছু দুষ্কৃতী স্থানীয় কিছু বাসিন্দাদের মদতে জঙ্গলে গাছ কাটছে। ওই এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।” পরিস্থিতি সামাল দিতে বন কর্তারা ২৮ মাইল এলাকায় টাওয়ার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ছাড়াও ইডিসি কমিটি গুলিকে সক্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বন দফতরে সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গলের বিট অফিস গুলোতে পর্যাপ্ত কর্মী না-থাকায় ওই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বক্সা রোড বিট অফিসে যে ৫-৬ জন কর্মী আছেন তাঁদের রাতে হাতি তাড়ানো থেকে জঙ্গল পাহারা সবই করতে হচ্ছে। জঙ্গলে নজরদারি চালানো সম্ভব হয় না। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের রাজাভাতখাওয়া থেকে ২৮ মাইল বনবস্তি যেতে পূর্ত দফতরের রাস্তা থেকে বাঁ দিকে পড়বে জঙ্গল এলাকা। ওই জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে গাঙ্গুটিয়া যাতায়াতের রাস্তা ধরে আধ কিলোমিটার এগোলে চোখে পড়বে অন্তত ১৫টি বড় শাল গাছ কেটে ফেলে রেখেছে দুষ্কৃতীরা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বনবস্তির এক বাসিন্দা জানান, প্রায় রাতে গাঙ্গুটিয়া ও চিনচুলা চা বাগানের দিক থেকে কাঠ চোরের দল জঙ্গলে ঢুকে গাছ কাটছে। বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি দেখে আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত জানান, জঙ্গলে কাঠ চুরি নয়। যেন লুঠ চলছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট মজদুর ইউনিয়েনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারি সভাপতি গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য বলেন, “জঙ্গলের কাঠ শহরের দোকানগুলিতে যাচ্ছে। বন দফতরের উচিত অভিযান চালানো। সেটা হলে কাঠ পাচার কমবে।” অভিযোগ উঠেছে, বনকর্মীরা চোরাই কাঠ উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও দুষ্কৃতীদের ধরতে পারছে না। ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট সার্ভিস এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের উত্তরবঙ্গ কমিটির চেয়ারম্যান নবেন্দু কর বলেন, “অভিযান চালিয়ে কাঠ উদ্ধার করা সম্ভব হলেও কেউ ধরা পড়ছে না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.