নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর |
এক তরুণীকে শ্বাসরোধ করে খুন করল দুষ্কৃতীরা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, তাঁকে খুনের আগে ধর্ষণও করা হয়। সোমবার সকালে একটি পুকুরপাড়ের ঝোপ থেকে ওই তরুণীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির শ্রীরামপুরের তালপুকুরে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম অপর্ণা গোস্বামী (২৪) ওরফে ডোনা। তাঁর বাড়ি শ্রীরামপুরেরই ভট্টাচার্য বাগান এলাকায়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) অমিতাভ বর্মা বলেন, “খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। কী কারণে ওই তরুণীকে নৃশংস ভাবে মেরে ফেলা হল, তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। সব দিক খোলা রেখে তদন্ত শুরু হয়েছে। তল্লাশি শুরু হয়েছে দুষ্কৃতীদের ধরতে।”
এ দিন সকালে তালপুকুর এলাকায় রাস্তার ধারে একটি পুকুরপাড়ের ঝোপে ওই তরুণীর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে শ্রীরামপুর থানায় পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ জানায়, তাঁর গলায় দাগ ছিল। মুখের
|
ছবি: মোহন দাস। |
ডানদিক থেকে রক্ত বেরচ্ছিল। পরনে জ্যাকেট ছিল। নিম্নাঙ্গে কোনও পোশাক ছিল না। তাঁর জিনসের প্যান্ট দেহের পাশেই খেঁজুর গাছে ঝুলছিল। দেহটি উদ্ধার করে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। হুগলি পুলিশের এক কর্তা বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে ওই তরুণীকে যে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রের খবর, বছর পাঁচেক আগে এক পঞ্জাবি যুবককে বিয়ে করে পঞ্জাবে চলে যান অপর্ণা। তাঁদের একটি চার বছর এবং একটি দু’বছরের মেয়ে রয়েছে। বছর খানেক আগে তিনি মেয়েদের নিয়ে শ্রীরামপুরে বাপের বাড়িতে ফিরে আসেন। জানান, স্বামী মারা গিয়েছেন। তার পর থেকে তিনি শ্রীরামপুরেই বাবা-মা এবং বোনের সঙ্গে থাকছিলেন। রবিবার তাঁর বাবা-মা নবদ্বীপে এক আত্মীয়ের অন্ত্যেষ্টিতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন।
তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের কাছে নিহতের পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, অপর্ণা আয়ার কাজ করতেন। রবিবার রাত সওয়া ৮টা নাগাদ তিনি কাজে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। আর ফেরেননি। অপর্ণার জ্যাঠতুতো দিদি রিনা গোস্বামী বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম ও কাজে গিয়েছে। রাতে না ফেরায় খোঁজাখুজি করা হয়। ওর মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। সকালে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে গিয়েছিলাম। তখনই পুলিশ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায়। সেখানে অপর্নার দেহ শনাক্ত করি আমরা।” বাড়ির লোকজন জানান, সাধারণত সকাল ৮টায় কাজে বেরতেন অপর্না। ফিরতেন রাত ৯টা নাগাদ। ওই দিন কেন রাতে বেরলেন, আদৌ কাজে গিয়েছিলেন কিনা, না গেলে কোথায় ছিলেন এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। |