সিপিএম বলছে ‘প্রতিহিংসা’
কী ঘটেছিল, সাঁইবাড়ি জানাল তদন্ত কমিশনকে
রুদ্ধদ্বার ঘরে এক সদস্যের তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে সাঁইবাড়ির সদস্যেরা বলছেন ‘এ বার হয়তো সুবিচার পাব।’
সোমবার বিকেল ৪টে নাগাদ কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণাভ বসু যখন বর্ধমানের প্রতাপেশ্বর শিবতলা লেনে সাঁইবাড়িতে ঢোকেন, নিহতদের ভাই-বোনেরা সেখানে হাজির ছিলেন। অরুণাভবাবুর সঙ্গে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টে চলা মামলায় পরিবার পক্ষের আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) শরৎ দ্বিবেদী, বর্ধমান থানার আইসি স্বপনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
১৯৭০ সালে ১৭ মার্চ বর্ধমানের ওই বাড়িতে ঢুকে পরিবারের দুই ভাই মলয় ও প্রণব সাঁই এবং গৃহশিক্ষক জিতেন রায়কে খুন করা হয়েছিল। মলয়-প্রণবের মা মৃগনয়না সাঁইকে জোর করে ছেলেদের রক্তমাখা ভাত খাওয়ানো হয় বলে অভিযোগ। সিপিএমের রাজ্যস্তরের একাধিক নেতা এই ঘটনায় অভিযুক্ত। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁরা ক্ষমতায় এলে নতুন করে তদন্ত কমিশন বসানো হবে। সেই মতো তদন্ত শুরু হয়েছে।
সাঁইবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান। সোমবার উদিত সিংহের তোলা ছবি।
পরিবারের প্রায় কেউই এখন ওই বাড়িটিতে থাকেন না। কিন্তু কমিশনের প্রতিনিধি আসার খবর পেয়ে মৃগনয়নাদেবীর বড় মেয়ে স্বর্ণলতা যশ ও তাঁর ছেলে অমৃক, মেজো ছেলে উদয়, ছোট ছেলে বিজয় ও বড় ছেলে নবকুমারের স্ত্রী রেখারানি আগেই চলে এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গেই বাড়ির আনাচ-কানাচ ঘুরে দেখেন কমিশনের চেয়ারম্যান। পরে স্বর্ণলতাদেবী বলেন, “যারা সে দিন আমার ভাইদের খুন করেছিল সেই বিনয় কোঙার, নিরুপম সেনদের সাজা চাই।” উদয় সাঁইয়ের অভিযোগ, “সে দিন সিপিএমের অনিল বসু, রজত বন্দ্যোপাধ্যায়েরা দলবল নিয়ে পাড়া ঘিরে ফেলেছিল। বিচার চেয়ে বহু দরজায় ঘুরেছি। এত দিনে মনে হচ্ছে সুবিচার পাব।” বর্ধমান থানা থেকে মোটিস পাঠিয়ে আরও ১৪ জনকে সাক্ষ্য দিতে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের সাক্ষ্য হয়নি। অরুণাভবাবু বলেন, “ওঁদের পরে ফের ডেকে পাঠিয়ে সাক্ষ্য নেওয়া হতে পারে।”
সিপিএমের বর্ধমান শহর জোনাল সম্মেলনের খসড়া প্রতিবেদনেই বলা হয়েছিল, নির্বাচনের আগে সাঁইবাড়ি নিয়ে বিরোধীদের ‘বল্গাহীন প্রচারের’ মোকাবিলা করতে পার্টি ব্যর্থ হয়েছে। এ দিন দলের জেলা সম্পাদক অমল হালদার অভিযোগ করেন, “সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে তারাপদ মুখোপাধ্যায় কমিশন গড়া হয়েছিল। সেই কমিশনের রায়কে সামনে রেখে দোষীদের সাজা দেওয়া যেত। কিন্তু তা হয়নি। ৪০ বছর পরে ঘটনাটি যখন মানুষের স্মৃতি থেকে মুছে গিয়েছে, ফের একটি কমিশন গড়া হয়েছে। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা ছাড়া কিছু নয় বলে আমাদের ধারণা।”
কমিশনের কাজের পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অমলবাবু। তাঁর মতে, কমিশন তদন্ত শুরু করলে সংবাদপত্রে নোটিস দিয়ে সাক্ষীদের ডাকা নিয়ম। এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। নেতাদের নামে অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডে নিরুপম সেন জড়িত বলে আগে প্রশ্ন তোলা হয়নি। ১৯৮৭ সাল থেকে নিরুপমবাবু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত কেউ কোনও প্রশ্ন তোলেনি। খুনের মামলায় যেখানে সাধারণত ৯০ দিন পরে জামিন হয়ে যায়, বিনয় কোঙারকে পাঁচ বছর জেলে থাকতে হয়েছিল। কমিশন তার কাজ করুক, আমরাও আমাদের কথা বলব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.