কী ভাবে আবেদন করতে হবে একশো দিনের কাজের জন্য। জবর্কাড-ই বা মিলবে কী ভাবে। এ সব জানিয়ে দিল রনি। আর ভিড় করে সে সব শুনলেন কালনা ২ ব্লকের বাসিন্দারা।
রনি একটি পুতুল। সে কথা বলে।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে গতি আনতে আর সচেতনতা বাড়াতে পুতুল নাচের এই অনুষ্ঠানকেই হাতিয়ার করল জেলা প্রশাসন। |
সোমবার ৬ জনের একটি দল কালনা ২ ব্লকে পৌঁছয়। সিঙেরকোন, বৈদ্যপুর এবং পিন্ডিরা এলাকায় যে সমস্ত জায়গায় একশো দিনের কাজ চলছে, সেই সব জায়গাতেই প্রচার চালান তাঁরা। একশো দিনের কাজের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, প্রথমেই বাজনা বাজিয়ে গাছের ছায়ায় ডেকে আনা হয় তাঁদের। বাজনার আওয়াজে ছুটে আসেন গ্রামের অন্য বাসিন্দারাও। এর পরেই কথা শুরু করে পুতুল রনি। সাধারণ মানুষের সামনে একের পর এক নানা তথ্য তুলে ধরে সে। একশো দিনের কাজের জন্য কোন ফর্মের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে, জবকার্ড ক’দিনের মধ্যে পাওয়া যাবে, মজুরি কত, এ সব নানা তথ্য। শুধু তাই নয়, রনি সবাইকে বুঝিয়ে দিল, মাটি শক্ত বা নরম হলে মজুরিতে তারতম্য কত হতে পারে আর কী কী কাজ পাওয়া যেতে পারে প্রকল্পের মাধ্যমে। প্রকল্পের অভিজ্ঞতা কেমন, সে সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কাছ থেকেও জানতে চাওয়া হয় এ দিন। অনেকেই জানান, মজুরির হার বৃদ্ধি করা হোক। কাজের সঙ্গে সঙ্গে হাতে হাতেই দিয়ে দেওয়া হোক মজুরি। |
এ দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে এই প্রচার। দলটির সঙ্গে ছিলেন কালনা ২-এর বিডিও সুদীপ পাল এবং কালনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের দেবু টুডু। এলাকার বাসিন্দাদের উদ্দেশে বিডিও জানান, আপাতত ব্লক প্রশাসন মানুষকে ৫০ দিনের কাজ দেওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। পরে ধাপে ধাপে কাজ আরও বাড়বে। বিডিও-র দাবি, এর মাধ্যমে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে সচেতনতা অনেকটাই বাড়বে। দেবুবাবুর কথায়, “ব্লকের মানুষকে এই কাজে উদ্বুদ্ধ করতে সরকারি ভাবে বেশ ভাল উদ্যোগ।”
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকেই কথা বলা পুতুলের সাহায্যে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে প্রচারে উদ্যোগী হয় জেলা প্রশাসন। হুগলির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সংগঠনের কো-অর্ডিনেটর অভিজিৎ ঘোষ এ দিন জানান, রায়না, বর্ধমান ১ ও ২, মেমারি ১ ও ২, কেতুগ্রাম, আউশগ্রাম-সহ জেলার ১৪টি ব্লকে এই ধরনের প্রচারাভিযান চালানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। জেলার প্রতিটি এলাকাতেই এই প্রচার কাজ দ্রুত পৌঁছে দিতে চান তাঁরা।
কথা বলা পুতুল ছাড়াও এই প্রকল্প নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে জেলার বিভিন্ন ব্লকে ঘুরছে নানা পোস্টার লাগানো গাড়ি-ও। |