ছাত্র সংসদ গঠন নিয়ে বিবাদ অধ্যক্ষ নিগ্রহে গড়ানোর পরেও কোচবিহারের হলদিবাড়ি কলেজে অচলাবস্থা কাটেনি। শনিবার সন্ধ্যায় এসএফআই এবং ছাত্র ব্লক ওই কলেজের ছাত্র সংসদ গঠনে ছাত্র পরিষদকে সাহায্যের আশ্বাস দিলেও রবিবার বেঁকে বসেছে। তাঁদের বক্তব্য, কলেজে তাঁরা কোনও অশান্তি চান না। বিশেষ করে অধ্যক্ষ নিগ্রহের ঘটনায় জড়িত ছাত্র পরিষদ নেতা প্রসেনজিৎ দাসকে সাধারণ সম্পাদক করা হলে তাঁরাও সমর্থন জানাতে চান না। গত ৪ ফেব্রুয়ারি ওই কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র পরিষদ ১০টি করে আসন পায়। এসএফআই ও ছাত্র ব্লক ৩টি করে আসন পায়। অধ্যক্ষ নিগ্রহের দিনই কলেজের ছাত্র সংসদ গঠনের দিন স্থির ছিল। শুক্রবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র পরিষদ ছাত্র সংসদ গঠন নিয়ে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে ঠিক হয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের পদ পাবে ছাত্র পরিষদ। ছাত্র সংসদ গঠনের দিন জানা যায় ছাত্র পরিষদ প্রসেনজিৎ দাসকে ওই পদে মনোনীত করেছে। ওই ঘটনায় ছাত্র পরিষদকে সমর্থন জানাতে অস্বীকার করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। অন্যদিকে, ছাত্র ব্লকের এক নেতা তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে সমর্থন জানিয়ে একটি প্যানেল জমা দিয়ে আসে। ঘটনাটি জানার পরে অধ্যক্ষ তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ছাত্র সংসদ গঠনের জন্য সময় চান প্রসেনজিৎবাবু। অধ্যক্ষ সময় দিতে না-চাইলে প্রসেনজিৎ সেই সময় নির্বাচন সংক্রান্ত ফাইলটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের ধস্তাধস্তিতে অধ্যক্ষের বা হাতের একটি নখ উপড়ে যায়। সন্ধ্যায় এসএফআই ও ছাত্র ব্লক ছাত্র সংসদ গঠনের জন্য ছাত্র পরিষদকে সমর্থন জানায়। পুলিশ অভিযুক্ত ছাত্রকে খুঁজছে। রবিবার অবশ্য বামপন্থী ওই দুই সংগঠনই দাবি করেছে, প্রসেনজিৎ দাসকে সাধারণ সম্পাদক পদে তাঁরাও চান না। এসএফআইয়ের কোচবিহার জেলা সম্পাদক দেবজিৎ গোস্বামী এবং ছাত্র ব্লকের হলদিবাড়ি ব্লক সম্পাদক মোরসেদুল প্রধান বলেন, “আমাদের প্রথম শর্ত ছিল কলেজে কোনও নৈরাজ্য সৃষ্টি করা চলবে না। প্রসেনজিৎ দাসের আচরণ আমরা সমর্থন করি না। এরকম অবস্থায় ছাত্র পরিষদ সাধারণ সম্পাদক পদে প্রসেনজিতের নাম প্রস্তাব করলে আমরা সমর্থন করব কি না ভেবে দেখতে হবে।” অভিযুক্ত প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ করা হয়েছে। আমি কাউকে নিগ্রহ করিনি।” ছাত্র পরিষদের হলদিবাড়ি ব্লকের সভাপতি সঞ্জয় সাহা বলেন, “বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলির সঙ্গে আমাদের জোট হয়নি। শনিবার কলেজের ভেতরে এসফআই এবং ছাত্র ব্লকের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সাদারণ সম্পাদক পদে আমাদের প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ দাসকে সমর্থন জানায়। এর পরে ওরা কী করবে সেটা ওদের ব্যাপার।” তৃণমূল এদিনও প্রসেনজিৎ দাসের গ্রেফতার দাবি করেছে। ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সম্পাদক পবিত্র রায় বলেন, “আমরা একজন ছাত্রের অন্যায় এবং অমানবিক কার্যকলাপের প্রতিবাদ করেছি। মহাবিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে হবে।” |