প্রেমে ‘প্রত্যাখ্যাত’ এক তরুণ ও তার সঙ্গীদের মারধরে গুরুতর জখম হয়েছিলেন এক কলেজ ছাত্রীর বাবা। রবিবার তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি মালদহের গাজল থানার গারাধোলা গ্রামে প্রসেনজিৎ বিশ্বাস নামে ওই তরুণ ও তাঁর চার সঙ্গী গোপাল অধিকারীর (৫০) বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। গোপালবাবুকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। মার খান তাঁর স্ত্রী সাবিত্রীদেবীও। তিনি মালদহ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গোপালবাবুকে ভর্তি করানো হয়েছিল কলকাতার একটি নার্সিংহোমে। এ দিন সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই তরুণীর অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনার পরের দিনই প্রসেনজিৎকে গ্রেফতার করে। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বিকেলে বলেন, “গোপালবাবুর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এ বার ৩০২ ধারায় মামলা করা হবে। বাকি তিন অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টিই সম্পন্ন কৃষিজীবী পরিবার। একই গ্রামে কাছাকাছি বাড়ি। ওই তরুণী মালদহ কলেজের ছাত্রী। ধৃত প্রসেনজিৎ হরিরামপুর কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রসেনজিৎ নাছোড় হলেও তাঁর সঙ্গে ‘সম্পর্ক গড়তে’ রাজি ছিলেন না ওই তরুণী। অভিযোগ, গত সোমবার (৬ তারিখ) কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার সময় ওই তরুণী বাস থেকে নামতেই প্রসেনজিৎ ও তাঁর তিন সঙ্গী তরুণীর মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। মেয়ের কাছে সব শুনে ওই দিনই সন্ধ্যায় গোপালবাবু প্রসেনজিতের বাড়িতে গিয়ে মেয়ের মোবাইল নিয়ে আসেন। ওই রাতেই প্রসেনজিৎরা লাঠি, হাঁসুয়া নিয়ে গোপালবাবুদের বাড়িতে হামলা করেন বলে অভিযোগ। ওই তরুণীর কাকা ও জ্যাঠাও জখম হন। গোপালবাবুর দুই ভাই চিকিৎসার পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। গোপালবাবুকে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছিল।
পরে তাঁকে নিয়ে আসা হয় কৃষ্ণনগরে। তত ক্ষণে অবশ্য মারা গিয়েছেন ওই প্রৌঢ়। কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালেই ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা হয়। তবে গোপালবাবুর মৃত্যু কলকাতার নার্সিংহোমেই হয়েছে না কি পথে তিনি মারা গিয়েছেন, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
ওই কলেজ ছাত্রী এর পরেই তাঁর ভাইকে নিয়ে নিজেদের গ্রাম ছেড়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন বলে জানা গিয়েছে। প্রসেনজিৎকে গ্রেফতারের পরে তাঁর পরিবারের সদস্যেরাও গ্রাম ছাড়েন।
বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে এ দিন জ্ঞান হারান ওই কলেজ ছাত্রী। তাঁর কাকা গণেশ অধিকারী বলেন, “খারাপ খবরটা এখনও হাসপাতালে ভর্তি বৌদিকে জানাতে পারিনি। কলকাতা থেকে দাদার মৃতদেহ গ্রামে পৌঁছালে তারপর বৌদিকে দাদার মৃত্যু
সংবাদ জানাব।” |